আগস্ট ২৪, ২০২০
লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে হতাশ দেবহাটায় পাট চাষিরা
কাদের মহিউদ্দীন : দেবহাটায় পাটের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না কৃষকরা। বিঘা প্রতি প্রায় নয় হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর তোষা জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০.৫০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছিল ৮০ হেক্টর জমিতে। উপজেলা বাজার গুলোতে নতুন পাট ওঠা শুরু হয়েছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম মণ প্রতি ১৮শ’ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যšত্ম পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে পাটের দাম ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। পাটের দাম কম হওয়ায় কৃষকদের মুখের হাসি ¤øান হয়ে গেছে। উপজেলার কুলিয়া বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের চাষি ফরিদুর রহমান ফুট্টু ‘সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’ দেবহাটা প্রতিনিধিকে জানান দেড় বিঘা জমিতে পাট চাষে বীজ, সার, সেচ, নিড়ানি, কাটা, জাগ দেওয়া ইত্যাদি বাবদ তার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা। দেড় বিঘা জমি থেকে পাটের ফলন পাওয়া যায় ১৪ থেকে ১৫ মণ। ১৫ মণ পাটের বর্তমান বাজার মূল্য ২২ হাজার ৫শ’ টাকা। এর সাথে দেড় বিঘা জমির পাটখড়ির মূল্য সাড়ে ৪ হাজার টাকা বিক্রি হলেও মোট মূল্য পাওয়া যায় ২৭ হাজার টাকা। ফলে দেড় বিঘা জমিতে পাটের লোকসান গুনতে হচ্ছে ১১ হাজার টাকা। আর বিঘা প্রতি ৯ হাজার টাকা। কুলিয়া আশু মার্কেটের আল আমিন এজেন্সির স্বত্বাধিকারী পাট ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান জানান, উপজেলার পুস্পকাটি, খাসখামার, বহেরা, কুলিয়া, পারুলিয়া, সখিপুর, দেবহাটা সহ গাজীরহাটের বিভিন্ন বাজারে নতুন পাট উঠতে শুরু করেছে। এক শ্রেণির অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী কম দামে ভাল পাঠ কিনে গুদামজাত করছেন। বাজারে পাটের আমদানি ভাল হলেও বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। বিগত কয়েক বছর যাবৎ দাম চড়া থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা নতুন করে পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। হাদীপুরের পাট চাষি আলমগির সরদার জানান, কৃষকের পাট জাঁক দিতে দারুন ভোগাšিত্মর শিকার হয়েছেন। এ বছর অপরিষ্কার পানিতে পাট পচায় পাটের রং কালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বেশিরভাগ পাটের রং কালো। কুলিয়া আশু মার্কেটে পাট বিক্রি করতে আসা খাস খামারের কৃষক ইলিয়াছ হোসেন জানান, এবছর বদ্ধ ও পাঁচ পানিতে পাট জাক ও মাটি চাপা দেওয়ার কারণে পাটে সোনালি রং আসেনি। এদিকে পাটের দাম কমে যাওয়ার কারণে লাভতো দুরের কথা ধার দেনা পরিশোধও হচ্ছে না। সোনালি আঁশ পাট এ বছর কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেবহাটা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শরীফ মো. তেতুমীর জানান এ বছরে পাট উৎপাদনের খরচ বেশি হয়েছে প্রায় ৮০ভাগ পাট কাটা শেষ হয়েছে, তবে পাটের দাম কৃষকদের কাক্সিক্ষত মানের নয়। মন প্রতি ২ হাজার ৫শ’ টাকা বিক্রি হলে কৃষকরা কোনোমতে বেঁচে যেত। তাই কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ ব্যাংক থেকে পাট চাষের আর্থিক সহায়তা দিলে এই কৃষকদের বাঁচানো সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল। 8,022,619 total views, 179 views today |
|
|
|