Site icon suprovatsatkhira.com

ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে লবনাক্ত পানি তুলে ফসলি জমিসহ খাবার পানি নষ্ট করার অভিযোগ

সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তারানীপুর এলাকার মৎস্য ঘেরে লোনা পানি তুলে ফসলি জমি ও খাবার পানির পুকুর নষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসীরা। এ বিষয়ে এলাকাবাসী গণ স্বাক্ষর দিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রমজাননগর ইউনিয়নের সোরা গ্রামের মৃত্যু তারিফ গাজীর পুত্র শিল্পপতি আরব আলী গাজী দীর্ঘদিন ধরে সোরা গ্রামের কয়েক শ’ একর মৎস্য ঘেরের জমিতে পানি বিক্রি করে আসছে। আর এর জন্য ওয়াপদার ভেড়ী বাঁধ ছিদ্র করে এই লোনা পানি কয়েক শ’ একর মৎস্য ঘেরে সরবরাহ করে থাকে। পার্শ্ববর্তী ২শ’ একর ধানের ফসলি জমিতে চুঁইয়ে পানি আসলে চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে পানি নিষ্কাশন না হওয়ার ফলে এই লোনা পানি ধান্য ফসলি জমিতে চলে আসে। যার কারণে চাষিরা বর্ষার সময়ে চাষ করতে পারে না এবং ইরি চাষে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ২টি কেয়ারের রাস্তা। কেয়ারের ইটের সোলিং রাস্তা লোনা পানিতে ডুবে থাকে। যার কারণে জনসাধারণের চলাচলের অসুবিধা হয়ে থাকে এবং মোটরসাইকেল সহ যানবাহন চলাচলে প্রতি নিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হয়ে থাকে।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, উপক‚লীয় অঞ্চলের সব থেকে বড় সমস্যা সুপেয় খাবার পানি। যদিও এই এলাকায় বড় ছোট কয়েকটি খাবার পানির পুকুর রয়েছে। কিন্তু বর্ষার সময়ে লোনা পানিতে ভরে যায়। পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় পানি বন্দী অবস্থায় প্রায় ২শ’ পরিবার। বিষয়টি নিয়ে অত্র ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: হায়াত আলী জানান, শিল্পপতি আরব আলী অর্থের দাপটে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে তার এমন ধরনের অন্যায় অব্যাহত রেখেছে। এক দিকে অর্থ ও অন্য দিকে গরিব, অসহায়, হতদরিদ্র মানুষ! এলাকায় লোনা পানিতে ভরে ফেলেছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা অসহায় হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বার বার আরব আলীকে জোয়ার বন্ধের কথা জানালে তিনি কারোর কথা কর্ণপাত না করে তার জোয়ার তোলা অব্যাহত রেখেছেন।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশ ক্রমে কোথায়ও জলাবদ্ধতা থাকবে না এমন ধরনের নির্দেশের পরও কিছু অসাধু ব্যক্তিদের কারণে এমন নির্দেশ অমান্য করে চলেছে। আমরা বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা আশ্বাস দিয়েও কোন সুরাহা করেনি।

এ বিষয়ে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মাছুদ রানা বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে আরব আলীকে মোবাইলের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার পানি উঠা কলের জন্য কারোর সমস্যা হচ্ছে না। যদি এমন ধরনের অভিযোগ থেকে থাকে তবে আপনি ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করে দেখেন। আর আমার পানি উঠা কলের পানি নিষ্কাশনের আউট ড্রেন ও আছে’।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হোসেন মিয়া বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করলে তিনি প্রতিবেদনের জন্য আমাকে জানালে আমি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেব। তিনি বিষয়টি দেখবেন’। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজার গিফারী বলেন, ‘আমি বিষয়টি দেখছি। জরুরী ভাবে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version