রাজু রায়হান, লাঙ্গলঝাড়া (কলারোয়া) প্রতিনিধি : কলারোয়া উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র গোয়ালচাতর বাজারের ২শ’ থেকে আড়াই শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী বটগাছ দুটি কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে। বটগাছ দুটি লাঙ্গলঝাড়া ও কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের সংযোগস্থল গোয়ালচাতর বাজার চৌরাস্তার মোড়ে অবস্থিত। ইতিহাসের জীবন্ত স্মৃতি বহন করা সহ প্রাচীনকাল থেকেই বটগাছ দুটি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে বলে জানায় স্থানীয়রা। তবে গাছের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যার অভাবে কমে যাচ্ছে বটগাছের মূল সৌন্দর্য ঝুলন্ত শিকড়গুলো।
ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি আবু সুলাইমান গাজী জানান, ‘এই বটগাছ দুইটির ইতিহাস অনেক পুরাতন। বটগাছ দুইটির বয়স প্রায় ২শ’ থেকে আড়াই শ’ বছরের মত’। তিনি আরো জানান, ‘এই বটগাছের নীচে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। বটতলার সেই বিদ্যালয়ে আমি লেখাপড়া করেছি। তাছাড়া গ্রামের বহু ছেলে মেয়ে এই বটতলায় লেখাপড়া করেছে। বটগাছটির বিশাল প্রাকৃতিক ডালপালা ছিল। সেই ডালপালার ঝুলন্ত শিকড়ে আমরা ছেলে বেলায় খেলাধুলা করতাম। কত স্মৃতি এই বটগাছ দুটিকে ঘিরে তা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। গাছের শাখা-প্রশাখা এতদূর বিস্তার ছিল যে, গাছ ছাড়া অন্তত ৫০ গজ বেয়ে পড়তো।
বটগাছ দুটি কে বা কারা রোপণ করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কে রোপণ করেছেন তা আমার বাপ-দাদারাও বলতে পারেনি। তবে তাদের মুখে শুনেছি তারাও বটগাছ দুটি জন্ম থেকেই দেখে এসেছে’। নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর অধিক মানুষের সমাগমের কারণে বটগাছ দুটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। তবে গাছের সু-বিশাল বকল গাছটিকে এক বিরাট মাত্রা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ২০০৬ সালে অধ্যাপক রেজাউল করিম (সাবেক অধ্যক্ষ, খুলনা ডে নাইট কলেজ) এই বটগাছের গোড়ায় বসার জন্য গোলাকৃত স্থাপনা ও সামনে আরো একটি সু-বিশাল বসার জায়গা স্থাপন করেন। শত শত মানুষ এখানে বসে বিশ্রাম করেন। এছাড়া আশেপাশে গ্রামের মানুষরা বাজারে আসলে বা পথচারীরা ক্লান্তি দুর করতে এই গাছ তলায় বসে সময় কাটান ও বিশ্রাম নেন। এজন্য ওই অঞ্চলের সচেতন ব্যক্তিরা বটগাছ দুটি সরকারিভাবে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।