জুলাই ১৬, ২০২০
করোনার হট স্পট ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখায় গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড়ে স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের আশঙ্খা
শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ : বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে কালিগঞ্জে ৯২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) পর্যন্ত ২৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯২ জন করোনাক্রান্ত হওয়ায় কালিগঞ্জ উপজেলায় করোনার প্রাদুর্ভাব যে মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইতোমধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, এক এসআইসহ ৩ পুলিশ সদস্য, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বেশ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। করোনা আক্রান্ত হয়ে নলতা পাক রওজা শরীফের খাদেম আলহাজ্জ্ব মৌলভী আনছার উদ্দীন, পল্লী চিকিৎসক ওমর ফারুকসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মা-ছেলসহ বেশ কয়েকজন। লাফিয়ে লাফিয়ে কালিগঞ্জে মানুষের মাঝে করোনার সংক্রমণ ঘটছে সেটি এখন আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। তবে সম্প্রতি করোনার হট স্পট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখা। শাখার ম্যানেজার নূর মোহাম্মদ (৪৮), ম্যানেজার (অপারেশন) আবুল হোসেন (৫১) সহ ইতোমধ্যে ১৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে আছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, শাখার মূল স্ট্রিমে কর্মরত আছেন ৩৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এর মধ্যে ১৪ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আরও ৮ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। ১৬ জুলাই ৫ জনের পজিটিভ রিপোর্ট আসার পর উপসর্গ দেখে আরও এক কর্মকর্তা ও এক পিয়নের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এই শাখার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাছাড়া একসাথে ১৪ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় শাখায় স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা ও গ্রাহকদের কাক্সিক্ষত সেবা প্রদানও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখায় ব্যাংকের বাইরে গ্রাহকদের লম্বা লাইন দেখা যায়। এর মধ্যে অনেকেই শারীরিক দূরত্ব বজায় না রেখে ও স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে ব্যাংকে প্রবেশের জন্য তাড়াহুড়ো করছেন। ব্যাংক ভবনের ভিতরেও একই অবস্থা দেখা গেছে। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ব্যাংকের ভিতরে গ্রাহকদের এধরণের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে অনেক কর্মকর্তা বলেন, অধিকাংশ গ্রাহক অসচেতন। বারবার বললেও তারা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছেন না। একদিকে ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারীরা একের পর এক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, অপরদিকে গ্রাহকদের শারীরিক দূরত্ব না মানা বা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করার পরিণাম যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। 8,958,462 total views, 14,212 views today |
|
|
|