মীর খায়রুল আলম : নির্বাচনে জয়লাভ করতে ভোটারদের কাছে নানা আশার বাণী শোনান জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু ভোট জয়লাভ করার পর কতটুকু তা বাস্তবায়ণ হয়। তেমনই সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের অনেক স্থান প্রত্যন্ত হওয়ায় এখানে নানা সমস্যা দীর্ঘদিনের। সুপেয় পানি সংকট, যোগাযোগের রাস্তা, ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো সহ সমস্যা লেগেই আছে। এই জনগোষ্ঠীর মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা খালের ওপর বাঁশের সাঁকো। এই সাঁকোগুলো বেশিরভাগ এলাকার জনগণ নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি। স্থায়ী সাঁকো না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষের। এরমধ্যে টিকেট পূর্ব পাড়া এলাকার সাঁকোটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। এমন নানাবিধ অভিযোগ তুলেছেন কুলিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখো গেছে, উপজেলার টিকেট এলাকাটি একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা। এখানে মানুষ অনেক কিছু থেকে পিছিয়ে রয়েছে। এমনকি সরকারি বে-সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছাতে অনেক বেগ পেতে হয়। সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষেরা না প্রতিক‚লতায় সংগ্রাম করে জীবন যাপন করেন। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে চরম দুর্ভোগে পৌঁছে গেছে এখানের মানুষের। খোঁজ নিয়ে আরো দেখা গেছে টিকেট পূর্বপাড়া খালের ওপর এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করেন। যা এক বা দুই বছর পর পর নতুন করে নির্মাণ করতে হয়। এই সাঁকোটি তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে সংস্কারও করে আসছেন। বর্তমানে সাঁকোটি নড়বড়ে হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে সাঁকো সংলগ্ন টিকেট পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। এছাড়া এই এলাকা থেকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে আসছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষ অত্যন্ত ঝুঁকিতে যাতায়াত করছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সবিতা রানী জানান, আমরা বিল এলাকায় বাস করি তাই আমাদের এলাকায় উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে। এই সাঁকোটি অনেক বছর ধরে এভাবে চলে আসছে কোন সংস্কার হয় না। আমরা মহিলারা খুব ভয়ে পারাপার হই। অনেক মায়েরা বাচ্চা নিয়ে পার হতে পারে না। মাঝে মাঝে আমি এবং অন্যরা তাদের সহযোগিতা করি। এভাবে আমাদের আর কত দিন চলতে হবে কে জানে।
একই এলাকার বাসিন্দা তাপস মন্ডল জানান, আমাদের জীবিকা নির্বাহ করা সহ প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে এই সাঁকো দিয়ে পার হতে হয়। কিন্ত এটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সময় মানুষ পড়ে যায়। লকডাউনের পূর্বে স্কুলে আসা ২ শিশু খালের জলে পড়ে যায়। সারাদেশে নানা উন্নয়ন হলেও আমাদের এই সাঁকোটি আজও এভাবে পড়ে আছে। এটি দ্রæত সম্পন্ন না হলে আমাদের বিপদের শেষ থাকবে না। আমরা একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, এই সাঁকোটি নির্মাণে বহুবার বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিরা আশার কথা বললেও আজ পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। ভোট শেষ হয়ে গেলে কেউ আমাদের কথা শুনতেও চাই না। তাই আর কিছু না হোক স্কুলগামী শিশুদের কথা ভেবে এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয় সেজন্য জেলা প্রশাসকের সু-নজর কামনা করছি।
কুলিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসাদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করব।