প্রেস বিজ্ঞপ্তি : সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সাবেক স্বামী কর্তৃক বর্তমান স্বামীকে খুন জখমের এবং বিভিন্নভাবে হয়রানির প্রতিবাদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন, শ্যামনগর উপজেলার কাঁকরঘাটা গ্রামের মো. শামসুর রহমানের কন্যা শাহিনা খাতুন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে ঈশ্বরীপুর গ্রামের মৃত. এনছার আলী সরদারের পুত্র আবু ইদ্রিস আলীর সাথে আমার পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের পর তার ঔরসে আমার দুটি সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান দুটি প্রতিবন্ধী হওয়ায় আমার স্বামী, শাশুড়ি হালিমা খাতুন, মামা শ্বশুর আবুল হোসেন, ননদের পুত্র মনিরুজ্জামান (বাবলু), দেবর এবাদুল, নতুন জয়নাব খাতুন আমাকে ভালো চোখে দেখত না। সব সময় গালিগালাজসহ বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন চালাত।
এদিকে আমার স্বামী আবু ইদ্রিস বিদেশে লোকজন নিয়ে যাওয়ার কাজের সাথে জড়িত ছিল। সে সময় বিভিন্ন মহিলাদের ভালো কাজ দেওয়ার শর্তে বিদেশে নিয়ে যেত। এক পর্যায়ে আবু ইদ্রিস পার্শ্ববর্তী ২ সন্তানের জননীকে বিদেশে নিয়ে বিবাহ করে এবং দীর্ঘদিন আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে। এরপর থেকে আমাকে মোবাইলে বলে“তোকে তালাক দিয়েছি” এবং আমার সংসার খরচসহ বাড়িতে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেয়। এদিকে দারুণ অর্থ কষ্টে অবহেলায় আমার দুটি প্রতিবন্ধী সন্তান মারা যায়। সে সময় ওই পাষন্ড স্বামী আমাদের কোন খবর নিতো না।
এমনকি সন্তানদের মৃত্যুর সময়েও তিনি বাড়িতে আসেননি। সন্তানদের মৃত্যুর প্রায় ৩ বছর পর বাড়ি আসেন। সে সময় বংশীপুর জামে মসজিদের মুফতিদের সমন্বয়ে তারা বলেন, আমার স্বামীর দেওয়া সে সময়ের তালাকটি বিধিসম্মত হয়েছে। সে কারণে আবু ইদ্রিস আমাকে আর বাড়িতে উঠতে দিত না এবং তারা ভাইসহ আত্মীয়রা আমাকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি উপায়ন্তর হয়ে পিতার বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করি। পিতার বাড়িতে ১ বছর থাকার পর আবু ইদ্রিস কোন খবর না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে আমার পিতা আমাকে অন্যত্র বিবাহের ব্যবস্থা করেন। সেখানে আমি শান্তিপূর্ণভাবে ঘরসংসার করাকালে ওই স্বামীর ঔরসে আমার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
আমি সুখে আছি খবর পেয়ে আবু ইদ্রিস ও তার আত্মীয় স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে সুখে থাকতে না দেওয়ার জন্য চক্রান্ত শুরু করে। এর জেরে কাঁকরঘাটা মৌজায়, খতিয়ান নং-১৬, দাগ নং ৩৬,৩৭, বিএস খতিয়ান নং-২০, হাল দাগ ১৩২, জমির পরিমাণ ১ একর ৭৩ মধ্যে ৩৩ শতক এবং মাতার পৈতৃক ১৯ শতক মোট ৫২ শতক সম্পত্তির মাথায় আমার পিতা কর্তৃক নির্মাণ করে দেওয়া ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান(দোকান) আবু ইদ্রিস নিজের বলে দাবি করে যাচ্ছে। অথচ আমার পিতা নিজের অর্থ খরচ করে আমার দুই ভাতিজা এবং দুই বোনের জন্য নির্মাণ করে দিয়েছিল।
উক্ত আবু ইদ্রিস কৌশলে উক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় মাদকাসক্ত মস্তান প্রকৃতির ছেলেদের ভাড়া করে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। উক্ত সম্পত্তি নিয়ে আবু ইদ্রিস অতি: জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় ৮৪৭/১৯ মামলা দায়ের করে। যা চলমান। এরপর আবারও শ্যামনগর থানায় একটি মিথ্যা মারপিটের মামলা দায়ের করে। যার নং- জি আর নং ১৭৬/২০। ওই আবু ইদ্রিসের কবল থেকে বর্তমান স্বামীকে রক্ষা এবং সম্পত্তি রক্ষার দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।