ডেস্ক রিপোর্ট: সিদ্দিক মেম্বরের নানান অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সরকারি মালামাল আত্মসাতসহ পাঁচ বছরে কোটিপতি হওয়ার বিস্তর অভিযোগের সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। ভুক্তভোগী সচেতন নাগরিক আওয়ামীলীগ নেতা ইউনুছ আলী মোড়ল গতকাল রবিবার এ সংবাদ সম্মেলন করেন। বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন কালিগঞ্জের হোগলা গ্রামের মৃত ইউছুপ মোড়লের ছেলে ইউনুস মোড়ল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ২ নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও শ্রীধরকাঠী গ্রামের মৃত নেফু শেখের পুত্র শিদ্দিকুর রহমান শেখ যেভাবেই হোক আমাদের মেম্বর। আমরা চেয়েছিলাম অন্তত ভাল হয়ে এলাকার জনগণের কল্যাণে কাজ করবে কিন্তু আমরা দেখলাম জনগণের কল্যাণে নয়, মেম্বর নিজেই কোটিপতি হয়েছে। নানান অনিয়ম আর দুর্নীতি করে তিনি আখের গুছিয়েছে নিজের পরিবারের জন্য। যার কিনা ছোট্ট একটি মুদি দোকান করে কোন রকম সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো, সেখানে আজ তিনি পাঁচ বছরের ব্যবধানে আলিশান বাড়ি, গাড়ী আর নামে বে-নামে হয়েছে অঢেল সম্পদের মালিক।
আমরা দুর্ণীতিবাজ এই সিদ্দিক মেম্বরের বিরুদ্ধে সত্য বলার পাশাপাশি তাকে দ্রæত আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করছি। তার বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কর্তৃক দুস্থদের ঘর দেওয়ার নাম করে নগদ টাকা নেওয়া, রেশন কার্ডের মাল আত্মসাত, মৃত ব্যক্তির ভাতার টাকা উত্তোলন, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করা, স্বামী ও স্ত্রী উভয়কে কার্ড দেওয়া, প্রকল্পের কাজে অনিয়মসহ বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সহজে কেহ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
আমরা তার হীন অপরাধ উল্লেখ করে গত ০১/০৬/২০২০ তারিখে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছিলাম। সে কারণেই মেম্বরসহ তার পেটুয়া বাহিনী লাঠি শোঠা নিয়ে ১২/০৬/২০২০ তারিখ সন্ধ্যায় অভিযোগকারীদের বাড়ি বাড়ি যেয়ে গালিগলাজ করে জীবন নাশের হুমকি দেয় এবং পথেঘাটে একাকী পাইলে হাত পা ভেঙে দেওয়াসহ খুন গুম করবে বলে প্রকাশ্যে আস্ফালন করে। এ বিষয়ে আমরা মেম্বরের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরীর আবেদন করেছি। আমরা বর্তমানে তার ও তার পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
দুর্নীতিবাজ সিদ্দিক মেম্বর ঘর দেওয়ার নাম করে হোগলা গ্রামের মৃত মফিজ সানার পুত্র (ভ্যান চালক) হান্নান সানার নিকট থেকে ৫ হাজার ও রেশন কাড দেওয়ার নামে ২৫ শত টাকা, মোবারক সদারের পুত্র শহিদ সরদারের নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়। এছাড়াও ছামসুর হমান পিং আনছার মোড়ল, আসাদুজ্জামান ময়না পিং বাবু শিকারীসহ ১৫/১৬ জনের রেশন কাডের চাউল আত্মসাত করেছে। মেম্বর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে স্বামী স্ত্রী দুইজনকেই কার্ড দিয়েছে।
যেমন আছমত মোড়লের নামে রেশনকাড স্ত্রী হাফিজার নামে, নুরুল সানার নামে রেশনকাড, স্ত্রী শেফালীর নামে শিশুকাড, সাইদুর মোড়লের নামে রেশনকাড স্ত্রীর নামে শিশুকাড। এমনিভাবে অত্র ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭/১৮ টি পরিবারে কার্ড দেওয়া হয়েছে।
মেম্বরের একান্ত দোসর আব্দুর রউপ মোল্যার (ডিলার)সহযোগিতায় ও যোগসাজসে গরীব ও অসহায়দের সরকারি বরাদ্ধকৃত অর্থ এবং মালামাল আত্মসাত করে আসছে। প্রত্যেকটি অভিযোগের সত্যতা আছে, এলাকায় তদন্তে গেলে যথাযথ প্রমাণ মিলবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী ছামসুর রহমান মোড়ল, আব্দুল হান্নান টাপালী ও শহিদ প্রমুখ।