জুন ৮, ২০২০
তালায় পাখিমারা টিআরএম বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুনঃ স্থাপন ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
তালা প্রতিনিধি : তালায় কপোতাক্ষ অববাহিকার পাখিমারা টিআরএম বিলের ভেঙে যাওয়া পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুনঃ স্থাপন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কপোতাক্ষ জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নের দাবিতে তালা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (০৮ জুন) দুপুরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রæত ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায়ের’ কার্যক্রম ২০১৭ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন দ্বারা বিশেষ করে তালা উপজেলায় অবস্থিত পাখিমারা বিলে টিআরএম বাস্তবায়িত হওয়ার দরুণ বিশাল কপোতাক্ষ অববাহিকার প্রায় ২০ লক্ষ অধিবাসী সরাসরি উপকৃত হয়েছে। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা দূরীভূত হওয়ায় মানুষের জীবন জীবিকা এখন নিরাপদে আছে। এজন্য এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির কৃতজ্ঞ। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো প্রথম পর্যায়ের প্রকল্প শেষ হওয়ার পর ইতিমধ্যে ৩ বৎসর অতিক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের কোন কার্যক্রম এখনও পর্যন্ত শুরু করা হয়নি। যার ফলে পলি জমে নদী আবারও যেমন ভরাট হতে শুরু করেছে, তেমনি বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধও নড়বড়ে ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিসহ বিল ব্যবস্থাপনায় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন ধরনের চরম বিশৃঙ্খলা। তিনি আরও বলেন, গত ২০ মে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান সৃষ্ট জলোচ্ছ¡াস দ্বারা বিলের মাদরা অংশের দুর্বল বেড়ি বাঁধ ৪/৫ জায়গায় ভেঙে গেছে এবং দোহার গৌতমকাটি অংশের বেড়ি বাঁধও বিধ্বস্ত হয়ে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এর সাথে গত ৪ জুনের পূর্ণিমা সৃষ্ট উচ্চ জোয়ারের চাপে মাদরা এলাকার গুচ্ছ গ্রাম, মাদরা, দোহার, আটুলিয়া ও মাগুরা এলাকা ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে গুচ্ছগ্রামের ১২০টি পরিবারের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। তাছাড়া টিআরএম এর বাইরে মাদরা, মাগুরা ও আটুলিয়া বিল এলাকার ঘের ভেড়ীর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং দোহার গৌতমকাটী এলাকার পেরিফেরিয়াল বাঁধও যেকোনো সময় জোয়ারের চাপে ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এলাকায় বসাবস করা নিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষের মনে সর্বদা আতঙ্ক বিরাজ করছে। মূলত. এ পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ভাবেই দায় এড়াতে পারে না। কেননা তাদের অবহেলা ও অনীহার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার ও মজবুত করা হয়নি এবং প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরুর কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে কারণে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনা দ্বারা জনগণের যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে কাছে। এছাড়া স্থানীয় জনগণের জীবন-জীবিকা অব্যাহত রাখতে সংবাদ সম্মেলনে জরুরীভাবে মাদরা, দোহার ও গৌতমকাটি অংশের পেরিফেরিয়াল বাঁধ পুনঃ স্থাপন, জলোচ্ছ¡াস ও উচ্চ জোয়ারের চাপে বাঁধ ভেঙে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং এলাকা যাতে আবারও জলাবদ্ধ কবলিত না হয় তার জন্য অনতিবিলম্বে কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। কেন্দ্রীয় পানি কমিটির নেতা অধ্যাপক হাসেম আলী ফকির, তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম ময়নুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, পানি কমিটি নেতা মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দীন জোয়ার্দ্দার ও মো. শফিকুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 8,614,622 total views, 6,279 views today |
|
|
|