নিজস্ব প্রতিনিধি: মো: রাফিউজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের গোবরদাড়ী পূর্ব কাশেমপুর এলাকার মৃত মাজেদ মাষ্টারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসির এন্তার অভিযোগ। জমি দখল, সুদে টাকা খাটানো, নিজস্ব বাহিনি সৃষ্টি করে রাতে আধারে মানুষকে জিম্মি করে অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ নানা আইন বর্হিভূত কর্মের কথা এলাকাবাসির মুখে মুখে।
এলাকার মৃত মতিয়ার এর ছেলে বদিয়ার রহমান (৭৫) সাংবাদিকদের জানান, গত ১৪ বছর আগে বদিউর রহমানের একটা পুকুর সহ এক বিঘা জমি দখল করে নেন মো: রাফিউজ্জামান ওরফে লাদেন বাবু ও তার অনুসারীরা। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে তার আরেক ভাই খুন হয়। ভাইয়ের খুনের ঘটনাটি পুঁজি করে তিনি এলাকার নিরীহ মানুষদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে যখন সবাই পলাতক থাকে তিনি তখন তাদের জায়গা জমি দখল করতে থাকেন। ওই এলাকার সোহেল উদ্দিন সরদারের স্ত্রীর ৮ শতক জমি দখল করে ওই লাদেন। সোহেল উদ্দিনের আপন ভাই মনির উদ্দিন সরদার এর স্ত্রী খোরজানের ২৫ জমিও দখল করে নেয় লাদেন ও তার লোকজন।
এলাকার মৃত মোঃ আলী সরদারের ছেলে নজরুল ইসলাম ৪০ জানান, তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার চিকিৎসার জন্য লাদেনের কাছ থেকে থাকা দুইটা ফাঁকা চেকে ও দুইটা স্ট্যাম্পের সহি স্বাক্ষর করে ৫০ হাজার টাকা সুদে গ্রহণ করেন। নজরুল ইসলাম গোবরদাড়ী হাই স্কুলে দপ্তরি পদে চাকরি করেন। ৫০ হাজার টাকায় প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা সুদ হিসাবে তাকে প্রদান করেছেন। দুই বছরে নজরুল ইসলাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা সুদ প্রদান করলেও তারপরও আসল টাকার জন্য লাদেন রাতের আঁধারে নজরুলের বাড়িতে হানা দিয়ে হুমকি প্রদান করে।
তিনি আরও বলেনে, এ সকল বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আইনজীবী এ্যাডভোকেট এসএম হায়দার আলী সালিস বৈঠকও করেন। কিন্ত তিনি সালিশের ওই সিদ্ধান্ত মানেনি। এখন লাদেন নয় লক্ষ টাকার একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন তার কাছে। একই এলাকার আব্দুল জলিল সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৮) জানান, লাদেন বাবুল কাছ থেকে সুদে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। গত এক বছর আগে গ্রহণ করলেও লাদেনকে তিনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেছে। তবে এখনো সেই ১০ হাজার টাকার জন্য লাদেনের হুমকি মুখে আছেন। ছইল উদ্দীন সরদারের ছেলে শওকত হোসেন বলেন, কাশেমপুর মৌজায় তার ৬০ শতক জমির মধ্যে ৮ শতক জমি লাদেনের পিতা মৃত মাজেদ মাস্টারের কাছে বিক্রি করেন। ৮ শতক জমি ক্রয় করে লাদেন বর্তমানে ৬০ শতক জমি দখল করে রেখেছে। তিনি সেখানকার গাছপালা কেটেও অন্যায়ভাবে বিক্রি করছেন।
লাদেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ শহরের মুনজিতপুর এলাকায়ও সে জমি দখল করে রেখেছে। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগও আছে। এসব অভিযোগে সে জেলও খেটেছে।
লাদেনের নামে রয়েছে কয়েকটি মামলাও।
এ বিষয়ে মো: রাফিউজ্জামান ওরফে লাদেন বাবুর সাথে সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। জেলা ইমাম পরিষদের সধারণ সম্পাদকও। তিনি কোন অন্যায় করতে পারেন না বলে দাবি করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গত ২০০৬ সালের ২২ জানুয়ারী তার ভাইকে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে খুন করা হয়। অভিযোগ কারীরা ওই খুনের মামলার আসামী। এ ছাড়া যারা তার নিকট থেকে টাকা গ্রহন করেছে তারা ডকুমেন্টস দিয়েই টাকা গ্রহন করেছে। মামলা থেকে বাঁচতে ও পাওনা টাকা না দেয়ার জন্য তার সন্মান নষ্ট করছে ওই সব অভিযোগ কারীরা। তিনি নিজেকে এক জন শান্তিপ্রিয় মানুষ হিসাবে সমাজে বসবাস করে আসছেন বলেও জানান।