Site icon suprovatsatkhira.com

আবদুল মোতালেব অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরল দৃষ্টান্ত—স্মরণসভায় মীর মোস্তাক আহমেদ রবি

নিজস্ব প্রতিনিধি : ‘মরহুম আবদুল মোতালেব ক্ষণজন্মা পুরুষ, আবদুল মোতালেব যুগে যুগে একজনই আসে। মোতালেব সাহেবের শূন্যস্থান কখনও পূরণ হওয়ার নয়। প্রয়াত এই সাংবাদিক ও সমাজসেবক তার কর্মের মধ্য দিয়ে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। তার আদর্শ ও চলার পথ অনুসরণ করে নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সাতক্ষীরার প্রতিটি ঘরে ঘরে একজন করে মোতালেব তৈরি করতে পারলে আমরা আদর্শ সাতক্ষীরা গড়তে পারব। সাতক্ষীরার শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি যে অবদান রেখে গেছেন তা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। নারী শিক্ষায়ও তার অবদান অনন্য। চার শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ করে তিনি দেশ খ্যাতি শিক্ষাবিদ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন’।

মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত মরহুম আবদুল মোতালেব এর ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এসব কথা বলেন।

স্মরণসভায় বক্তারা বলেন, ‘আবদুল মোতালেব একাধারে বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি, সাতক্ষীরার প্রথম দৈনিক কাফেলার সম্পাদক এবং সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ অবজারভার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি। তিনি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট ম্যানেজিং কমিটির বোর্ড মেম্বর, বাংলাদেশ স্কাউট এর ভাইস প্রেসিডেন্টসহ অগণিত সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। একজন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হিসেবে আবদুল মোতালেব নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন।

জেলা ও জেলার বাইরেও তিনি নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন অগণিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তিনি ছিলেন সাতক্ষীরার সাংবাদিকতার সূতিকাগার। সাতক্ষীরার কোনো সাংবাদিক তার সহযোগিতা ছাড়া নিজেদের পরিচিতি বাড়াতে পারেননি। তিনি ছিলেন সাতক্ষীরার উন্নয়নের রূপকার। আবদুল মোতালেব ছিলেন একজন পরিশ্রমী ও নিষ্ঠাবান সমাজসেবক। সমাজের এমন কোনো দিক নেই যেদিকে তিনি হাত দেননি। আর তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই তিনি ফলিয়েছেন সোনার ফসল। তিনি ছিলেন সমাজের নিপীড়িত মানুষের বন্ধু। দুর্যোগপ্রবণ জেলা সাতক্ষীরায় ঝড় বৃষ্টি, জলোচ্ছ¡াস হলেই আবদুল মোতালেব তার ত্রাণ বহর নিয়ে ছুটতেন সেখানে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের খাবার , বস্ত্র, ওষুধ ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দিতেন। তার দৃষ্টান্ত তিনি নিজেই।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি দৃষ্টিপাত সম্পাদক জি এম নুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকীন আহমেদ চিশতি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ও সাপ্তাহিক ইচ্ছেনদীর সম্পাদক মকসমুল হাকিম, দৈনিক আজকের সাতক্ষীরার সম্পাদক মহসিন হোসেন বাবলু, আওয়ালী লীগ নেতা শেখ হারুনর রশীদ, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোজাফ্ফর রহমান, ভোরের কাগজের স্টাফ রিপোর্টার দিলীপ কুমার দেব, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, দৈনিক কাফেলার চিফ রিপোর্টার এম. ঈদুজ্জামান ইদ্রিস প্রমুখ।

এর আগে মরহুম আবদুল মোতালেব এর রসুলপুরস্থ সরকারি কবরস্থানে মাজার জিয়ারত করেন সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা। সেখানে তার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করেন। পরে প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার শুরুতে তার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বক্তারা আরও বলেন, মোতালেব সাতক্ষীরার মানুষের কাছে একটি প্রিয় নাম। তার কর্মের ব্যাপ্তি ছিল দেশজুড়ে। তিনি মানুষের জন্য কাজ করেছেন হৃদয় দিয়ে। তার ভালবাসায় আমরা সবাই সিক্ত। ১৮ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব মরহুম আবদুল মোতালেব এর নামে একটি হলরুম করার ঘোষণা দেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রেডক্রিসেন্ট সাতক্ষীরা সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবু সায়ীদ, তোহিদুর রহমান ডাবলু, শেখ নুরুল হক, প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, অর্থ সম্পাদক মো. আবুল কালাম, নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কালিদাস রায়, মোহাম্মদ আলী সুজন, কামরুল হাসান, প্রেসক্লাব সদস্য মাছুদুর জামান সুমন, ডা: মহিদার রহমান, খন্দকার আনিসুর রহমান, শেখ রফিকুল ইসলাম রানা, শেখ হাসান গফুর প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন, দৈনিক কাফেলার বার্তা সম্পাদক এম রফিক।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version