জুন ১৪, ২০২০
বড়দলে ইউপি সদস্যের একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে থানায় জিডি
বড়দল (আশাশুনি) প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার বড়দলের ইউপি সদস্য হাফেজ রুহুল আমিন ও গ্রাম পুলিশ জেনারুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে থানায় ডায়েরি করেছে গ্রাম পুলিশের এক দফাদার। গত বুধবার (১০ জুন) ফকরাবাদ গ্রামের সাবেক দফাদার মৃত জমাত আলী বিশ্বাসের পুত্র বর্তমান গ্রাম পুলিশ (দফাদার) মোস্তাজুল হক বাদী হয়ে এ সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং (৪০২)। ডায়েরি সূত্রে জানা গেছে, ‘করোনা মহামারিতে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা, অসহায় গরিব দুঃখী মানুষ, খেটে খাওয়া দিন মজুর, ভ্যান চালক ও স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং কর্ম সৃজন কর্মসূচির কাজ, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্ব ভাতা ভিজিডি কার্ড, সরকারি ঘরসহ সকল প্রকার সরকারি সাহায্যের নামে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে সরকারি সহায়তা থেকে গ্রাম পুলিশ জেনারুল ইসলামের যোগসাজশে ইউপি সদস্য রুহুল আমিন প্রকৃত ব্যক্তিদের বঞ্চিত করেছে। ডায়েরি সূত্রে আরও জানা গেছে, মরণঘাতী করোনা ভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাÐবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অসহায় মানুষের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের নামে সরকারের দেওয়া অনুদান আত্মসাৎ করেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মান অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে বিষয়টি গত ১৪ মে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম মোল্ল্যাকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন, ‘টাকা-পয়সা আমাদের খেতে হবে তোমার যা ইচ্ছা তুমি তাই করো’। এদিকে জামায়াত নেতা হাফেজ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে ভিডিও বক্তব্যে অভিযোগকারীরা যথাক্রমে বলেন, ‘ফাকরাবাদ গ্রামের খানজাহান গাজী (খানজি) এর বাক প্রতিবন্ধী মেয়ের ৩০ কেজি চাউলের কার্ড করে দেবে বলে ৩ হাজার টাকা দাবি করে রুহুল আমিন। একই গ্রামের আলিমুদ্দিন মোড়লের পুত্র সানাউল্লার কাছ থেকে ৩০ কেজি চাউলের কার্ড বাবদ ৩ হাজার টাকা গ্রহণ করে সে। মৃত নওশের আলী গাজীর পুত্র মান্নান গাজী জানায়, আমার কাছ থেকে জেলা পরিষদের গাছ বিক্রয়ের কথা বলে ২৬ হাজার টাকা গ্রহণ করলেও গাছ দিতে ব্যর্থ হলে ১০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। অবশিষ্ট ১৬ হাজার টাকা এখনও আমার পাওনা আছে। এছাড়াও ওই ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের অডিও এবং ভিডিও সহ একাধিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানায়, ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা নেওয়া, ঈদুল ফিতরের চাউল ক‚টকৌশলে ৫ থেকে ১০ জনের নামের ¯িøপ করে চাউল বাড়ি নেওয়া এবং এলাকায় জুয়া খেলানো ও টাকার বিনিময় বাল্যবিবাহ দেওয়া সহ বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য ২০১৯ সালে ঈদুল ফিতরের চাউলে দুর্নীতি করায় সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত সহ বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় মেম্বারের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তারপরেও তিনি থেমে থাকেনি দুর্নীতি ও অনিয়মের কাজ থেকে। এলাকার গরিব অসহায় ব্যক্তিদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সরকারি কার্ড ও অনুদান দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অদৃশ্য শক্তি খাটিয়ে দুর্নীতি করেই চলেছেন। এ বিষয়ে বড়দল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার হাফেজ রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও, পিআইও, ট্যাগ অফিসার, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে আমাকে টাকা দেওয়া লাগে। তিনি আরও জানান, ‘প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাÐবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করতে যেয়ে বিভিন্ন কম্পিউটার বিল বাবদ ১৪ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে’। এ বিষয়ে এলাকার সাধারণ জনগণ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। 8,953,607 total views, 9,357 views today |
|
|
|