Site icon suprovatsatkhira.com

বৃদ্ধা নেছা বেগমের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ প্রকৃতির সাথে আতঙ্ক মাথায় নিয়ে ভাঙা ঘরে নির্ঘুমে রাত কাটে তার

নূরুন্নবী ইমন, সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : বৃদ্ধা মোছা. নেছা বেগম। বয়স ৬৭ বছর। তার ০৩ শতক জমি আছে তবে বসবাস উপযোগী ঘর নেই। ছোপরা একটি ঘর ছিল সেটাও আবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ভেঙে গেছে। এই ঘরে রাতে শুয়ে আকাশের তারা দেখা আর কখন ঝড়-তুফান, বৃষ্টি আসে, এমন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পোহাতে হয় নেছা বেগমের। বৃদ্ধা নেছা বেগম শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের তারানীপুর গ্রামের আব্দুল গফুর শেখের স্ত্রী।

জানা যায়, নেছা বেগমের একার সংসার। স্বামী বহু বছর পূর্বে ০২ কন্যাকে রেখে তাকে ছেড়ে চলে যায়। অনেক কষ্ট করে মেয়ে সন্তানদের বড় করে অন্যত্র বিয়ে দেন। বর্তমানে তারা স্বামীর সংসারে বসবাস করছে। তার কোন পুত্র সন্তান নেই। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সন্ধ্যায় ফিরে আসেন নিজ বাড়িতে। বাড়ি তো নয়, যেন ঝোপের মধ্যে বসবাস। চারিদিকে ঝাউ-জঙ্গলের মাঝে ভাঙা একটি ছোপরা ঘরেই চরম আতঙ্কে রাত কাটে তার। জীবন যুদ্ধে বেঁচে থাকতে সারাদিন পরিশ্রম করার পর রাতে একটু ভালভাবে ঘুমানোর পরিবেশটাও নেই তার। বৃষ্টি হলেই পানিতে ভিজে যায় তার বিছানাপত্র।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ওই ভাঙা ঘরটিতে প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে আছেন নেছা বেগম। “জমি আছে ঘর নাই” প্রকল্প চালু করেছে সরকার কিন্তু নেছা বেগম সেখান থেকে বঞ্চিত। প্রশাসন যদি নেছা বেগমেকে ওই প্রকল্প থেকে ঘর দেয় তাহলে বৃদ্ধা বয়সে ভালো ভাবে বসবাস করতে পারবে। তারা প্রশাসনের কাছে নেছা বেগমকে “জমি আছে ঘর নাই” ওই প্রকল্পের আওতায় আনার জোর দাবি জানায়।

বৃদ্ধা নেছা বেগম জানান, পেটের তাগিদে সারাদিন অপরের বাড়িতে পরিশ্রম শেষে ঘরে এসে আরামে ঘুমাব তাও পারি না। কখন যে ঝড়-বাতাস আর বৃষ্টিতে ঘরটি ভেঙে পড়ে এ জন্য রাত জেগে থাকতে হয়। এখন বর্ষাকাল হওয়ায় বৃষ্টি হলে ঘরের ভিতরে পানিতে ভরে যায়। বিগত বুলবুল ঝড়ে আমার ঘরটি ভেঙে যায়। আমি ভাঙা টিন, নষ্ট গোলপাতা আর পলিথিন জোগাড় করে কোন রকমে চাপা দিয়ে বসবাস করে আসছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন আগে সুপার সাইক্লোন আম্পান আবারও আমার ঘরটি লন্ডভন্ড করে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, আট কেজি চাউল আর তিন কেজি আলু ছাড়া সরকারি বা এনজিও কর্তৃক কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর নিকট একটি দুর্যোগ সহনীয় ঘর পাবার আকুতিও করেন তিনি।
রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন বলেন, নেছা বেগমের এমন অবস্থা আমার জানা নেই। দেখি কিছু করা যায় কিনা। শ্যামনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) জানান, নেছা বেগমের বিষয়টি অবশ্যই দেখা হবে। একই কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আ,ন,ম আবুজার গিফারী।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version