সুন্দরবন অঞ্চল প্রতিনিধি : পশ্চিম সুন্দরবনে বন-দস্যুরা বনে প্রবেশ করে হঠাৎ করে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে পূর্বের ন্যায় তান্ডব চালিয়ে মুক্তিপন আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছে কিছু জেলে। তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভিন্ন তথ্য, মূলত সুন্দরবনের অভয়অরণ্য এলাকায় অবৈধ ভাবে মাছ শিকারে জন্য ভারতীয় একটি দস্যু বাহিনীর সহযোগিতায় সাধারণ জেলেদের ভয় দেখাতে জেলে জিম্মির নাটক সাজিয়েছে ভেটখালি এলাকায় কয়েকজন মহাজন।
গত বুধবার (১০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পশ্চিম সুন্দরবনের রায়মঙ্গল তালপট্টি ছায়ার বড় খাল নামক স্থান থেকে বনদসবনদস্যুদের হাতে মজিদ এবং আব্দুল্লাহ নামের দুই জেলে জিম্মি হওয়ার ঘটনা জানান, ফিরে আসা কয়েকজন জেলে। তবে তারা কীভাবে সুন্দরবনের অভয়অরণ্য ঘোষিত ঐ এলাকায় মাছ ধরছিল এমন প্রশ্নে তারা কিছুই বলতে রাজি হননি। ফিরে আসা জেলেরা জানায় ‘বনদস্যু বাহিনী নিজেদেরকে জিয়া-সেলিম বাহিনী পরিচয় প্রদান করেছে। কিন্তু সাবেক দস্যু জিয়া সুন্দরবনে ডাকাতির সাথে যুক্ত রয়েছে এমন কোন প্রমাণ দিতে পারেনি তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কিছু জেলে জানান, ফেরত আসা জেলেরা দীর্ঘদিন একটি চক্রের হয়ে সুন্দরবনের নিষিদ্ধ এলাকায় মাছ শিকার করে। ঐ এলাকায় যাতে অন্য জেলেরা মাছ ধরতে না যায় সে জন্য তারা এমন নাটক সাজাতে পারে। আমাদের কাছে তথ্য আছে সেখানে ঐ চক্রের সদস্যরাই নতুন করে কাঁজল ওরফে মুন্না নামের এক পুরোনো দস্যুর নেতৃত্বে ছয়জনের একটি দস্যু দল তৈরি করেছে। এই দলে রয়েছে কাজল ওরফে মুন্না, মাসুম, সাজু-১, সাজু -২, হাসান ও ফজলু কিছুদিন আগে ভারত থেকে বনে এসেছে। এরা সবাই সবাই ফেরারী আসামি ভারতে পালিয়ে থাকে। সেখান থেকে মাঝে মাঝে বনে এসে ডাকাতি করে আবার চলে যায়। ভারতের কালিতলা এলাকার সুব্রত নামে এক ভারতীয় নাগরিকের মাধ্যেমে এরা বনে যাতায়াত করে। আর গত পরশুর অপহরণের ঘটনাটি সাজানো। স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজি সাহেব ও এক সাবেক ইউপি সদস্যের সাথে সমঝোতা করে তারা জেলে অপহরণ করেছে। এতে নতুন করে বনে আতঙ্ক তৈরি হবে। ভয়ে অন্য জেলেরা ঐ এলাকায় মাছ ধরতে যাবে না। যারা যাবে তারা ঐ চক্রকে চাঁদা দিয়ে যাবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অভয়অরণ্য এলাকায় মাছ ধরার জন্য বন বিভাগ কোন পাশ পারমিট দেয় না। তাহলে ঐ জেলেরা সেখানে কি করছিল? যদি কেউ অবৈধ ভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে তাহলে তার দায় বন বিভাগ নেবে না। ঐ সকল এলাকায় বন বিভাগের নিয়মিত টহল অব্যাহত রয়েছে। অবৈধ ভাবে মাছ শিকারে অভিযোগে একাধিক ট্রলার ও জেলেকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন অফিসার লে. এমতিয়াজ আলম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সুন্দরবনের ঐ এলাকায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেখানে কোন জেলে থাকার কথা না। তাছাড়া অপহরণের বিষয়ে ‘আমাদেরকে অফিশিয়াল ভাবে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি দেখা যাবে’।
র্যাব-৬ মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্পের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনে বড় কোন দস্যু বাহিনী নেই। ‘এবিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।