Site icon suprovatsatkhira.com

আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা, খুন জখমের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

প্রেস বিজ্ঞপ্তি : আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা এবং খুন জখমের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২১ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোত্তালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুচপুকুর গ্রামের মৃত. আব্দুর রহিমের পুত্র আব্দুল হামিদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা আব্দুর রহিম ১৯৬৪ সালের ১৩ জানুয়ারি একই গ্রামের কালু কাহারের কাছ থেকে ৬৬ শতক জমি ক্রয় করেন। সদরের ৪৭ নং বাবুলিয়া মৌজায় ৮০০ খতিয়ানের অধীন ৭১৭ খতিয়ানে ৯২৭ দাগে ২ একর ৮ শতক জমির মধ্যে এই ৬৬ শতক জমি ক্রয়কৃত। ১৯৯০ সালের হাল রেকর্ড অনুযায়ী জমির হাল দাগ ১৫৫ নং খতিয়ানে ৪৪৬ নং দাগ। সম্পত্তি ক্রয়ের পর থেকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছি। তবে ৬৬ শতক জমির মধ্যে ২৭ শতক জমি বাইপাস সড়কের জন্য সরকার অধিগ্রহণ করে নেয়। নিয়মানুযায়ী আমরা সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণের টাকাও পেয়েছি এবং তার রিসিভ কপি আমাদের কাছে আছে।

এমতাবস্থায় ২০১৭ সালে কালু কাহারের ৫ পুত্র নাজের আলী ওরফে নবের আলী, মোশারফ হোসেন, আমের আলী, মোমিন আলী ও এরশাদ আলী আমার পিতার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জবর দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। জমির পাশে তাদের বাড়ি হওয়ায় তারা রাতের আঁধারে একটু একটু করে জমি দখল করতে থাকে এবং জমিতে ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর উঠানো অব্যাহত আছে। জমিতে লাগানো আমাদের ৩০টি মেহগনি গাছসহ অন্যান্য গাছ ও ফসলাদি কেটে নেয়। এমনকি এই জমিতে বাড়ি করার জন্য রাখা এক ট্রাক বালিও তারা চুরি করে নেয়। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা দলবদ্ধভাবে মাথায় গামছা বেঁধে হাতে দা নিয়ে ছুটে আসে আমাদের খুন করার জন্য। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তারা। তিনি আরো বলেন জমি জবর দখল করার পাশাপাশি কালু কাহারের পুত্র আমের আলী বাদী হয়ে ২০১৭ সালে সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি সিভিল মামলা করে।
আমের আলী ২০১৭ সালে আমাদের আসামি করে অতি: জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় যে মামলা করে যার নং- ১২৯১/১৭। আদালত সদর থানা কে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তখন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এস আই শেখ সাইদুর রহমানকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। তখন ওই কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে স্মারক নং ১৯৮২(যু)ক্রি:মি: তারিখ ৩১/১৮/২০১৭ তারিখে আদালতে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেন এবং তাহাতে উল্লেখ করেন বাদীর পিতা কালু কাহার জীবিত অবস্থায় বিবাদীর পিতা মো. আব্দুর রহিম এর নিকট ১৯৬৪ সালে ৩১/৬৩ নং দলিল মূলে বিক্রয় করে দেয় এবং সেই থেকে তাহার পুত্র দ্বয় আব্দুল রহিমসহ তার ভাই বোনেরা ভোগ দখল করছে। এছাড়া সে মামলায় তারা আদালতে কোন তথ্য প্রমাণ না দেখাতে পারায় বিজ্ঞ আদালত সে মামলাটি খারিজ করে দেয়।
গত ৩/০৬/২০১৮ তারিখে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত সাতক্ষীরা ৭৬/১৮নং মামলা আমি বাদী হয়ে মো. কালু কাহার পুত্রদের নামে মামলা করি। বিজ্ঞ আদালত আমার পক্ষে ১৫/৭/১৯ তারিখে আদেশ দেয়।
তারপর ও বিবাদী বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র ও হুমকি অব্যাহত রাখলে আমি আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে অতি: ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সাতক্ষীরাতে ৯৩৭/২০১৮ ইং তারিখে আরো একটি মামলা করি। বিজ্ঞ আদালত ১১৯১ নং স্মারকে ৩১/৫/২০১৮ সদর থানাকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস আই মিরাজ আহমেদ কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। ওই কর্মকর্তা ২২/৬/২০১৮ তারিখে স্বাক্ষরিত তদন্ত প্রতিবেদন ২৪/৬/২০১৮ তারিখে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই কর্মকর্তা উক্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেন উক্ত জমি বাদী পক্ষের দখলে রয়েছে এবং বাদী পক্ষ নিজ মাতা এবং ভাইবোনদের পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে থাকাকালে ২য় পক্ষ (আসামি পক্ষ) বে আইনি নীতি বহির্ভূত হয়েছে এবং বেপরোয়া এবং তাহাদের দ্বারা উক্ত জমিতে যে কোন সময় মারাত্মক শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের সম্ভাবনা বিদ্যমান এবং .৩৯ একর জমি বাদীর নিরঙ্কুশ দখলে। ২য় পক্ষ গণের জোরে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। এবং বিবাদী দ্বয় তাহাদের কাগজপত্র দেখাতে বললে তারা কোন কাগজ দেখাতে পারে না এবং সময় গোপন করে।
এতে বিবাদী ক্ষ্যান্ত না হয়ে নাজের আলী ওরফে নাবের আলী ১৮/০৬/২০১৮ তারিখে ৭৮/১৮ নং দেওয়ানি মামলা করে। ওই মামলার আরজিতে উল্লেখ করে, উক্ত জমি তাহার পিতা মো. কালু কাহারের নয়, তার মাতা ফেলি বিবি এর নামে যে মামলাটি এখন চলমান। এত মামলা, হামলা, হত্যার হুমকির কারণে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গত ২৮/৮/২০১৮ তারিখে, ২৩/১০/২০১৯সহ কয়েকবার এবং সর্ব শেষ গত ২৪/০৩/২০২০ তারিখে উক্ত বিবাদীদের নামে সদর থানায় অভিযোগ করি।

এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি অব্যাহত রেখেছে এবং এখনও জমি দখলের পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য উক্ত জমির সরকারি খাজনা ১৯৬৩ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমি পরিশোধ করেছি। বর্তমানে উল্লেখিত ব্যক্তিরা আমাদের নানা ভাবে খুন জখম এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির হুমকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। উল্লেখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ও আমার জমি থেকে ঝুপড়ি ঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version