Site icon suprovatsatkhira.com

দেবহাটার ইছামতি নদীর বেড়িবাধের ভাঙন পৃথক পৃথক পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক ও জেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দ

মীর খায়রুল আলম: দেবহাটা উপজেলার নাংলা সহ বিভিন্ন এলাকার ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাধ পৃথক পৃথক ভাবে পরিদর্শন করেছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা। বুধবার আলাদা আলাদা ভাবে এই পরিদর্শন করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ঘূর্নিঝড় আম্ফানে ইছামতির নাংলা এলাকায় বেড়িবাধ ভেঙ্গে গিয়ে ঐ এলাকার ৫টি গ্রাম দক্ষিন নাংলা, মাঝেরআটি, জোনাইপাড়া, মোল্লাপাড়া ও ছুটিপুর গ্রাম প্লাবিত হয়। আর এতে মানুষের জীবন একদিকে যেমন অচল হয়ে পড়েছে তেমনি অন্যদিকে পরিবার পরিজন ও গবাদী পশুসহ জিনিষপত্র নিয়ে বিপাকে রয়েছেন তারা। এছাড়া ভাঙ্গনে পাশ্ববর্তী আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষ, গবাদি পশু, ঘের ও ফসল ফলাদী নিয়ে বিপদের ঝুঁকিতে রয়েছেন। সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের খাওয়া ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু ভাঙ্গনের প্রায় সপ্তাহ পার হতে চললেও পাউবো বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বাধ মেরামতে কোন পদক্ষেপ এখনো গ্রহন না করায় ঐ গ্রামগুলির মানুষ হতাশ।
এদিকে, বুধবার দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল সরেজমিনে ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা প্রশাসকের সাথে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া আফরীন, দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এসময় এলাকার ঝুঁকি কমাতে নতুন একটি রিংবাধ দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবী জানালে জেলা প্রশাসক তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
একই দিন দুপুর ১টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ মুনসুর আহম্মেদ এবং জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম উক্ত ভাঙ্গন কবলিত ভেড়ীবাধটি পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সাথে দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল গণি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান, উপজেলা আওলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, জেলা পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট সমাজসেবক আল ফেরদাউস আলফা, পারুলিয়া ইউপি চেয়াম্যান সাইফুল ইসলামসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর পক্ষে একটি দাবীনামা নেতৃবৃন্দের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ঐ এলাকার সাধারন মানুষ নিজেদের শ্রমে ভাঙ্গন কবলিত স্থানটি কোনরকমে মেরামত করলেও তাদের মধ্যে এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বড় ধরনের জোয়ার সৃষ্টি হলে ঐ বাধটি ভেঙ্গে পুনরায় প্লাবিত হতে পারে কয়েকটি গ্রাম। স্থানীয়রা জানান, আগামী ৩/৪ দিন পরে বড় ধরনের জোয়ার উঠবে, আর সেসময় হয়তো আবারো তারা প্লাবিত হতে পারেন। তাই এক অজানা আশংঙ্কায় দিনযাপন করছেন। গত কয়েকমাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে উক্ত স্থানে বøক দেয়ার জন্য ৫ কোটি, ৫৩ লাখ, ৮৩হাজার, ২২টাকা চুক্তি মূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি টেন্ডার পেয়েছেন কুমিল্লার ঝাউতলার মশিউর রহমান নামের এক ঠিকাদার। কিন্তু কাজটি সম্পন্ন করছে সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাসকিন আহম্মেদ চিশতি। মেয়রের লোক ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রশস্ত ভেড়ীবাধটি উপর থেকে মাটি কেটে নিচু করে ফেলে। যার কারনে ঝড়ের কবলে ভেড়ীবাধ উপচে পানি গ্রামের মধ্যে ঢুকতে ঢুকতে বাধটি ভেঙ্গে যায়। তাছাড়া তাদের তৈরী আর সিসি বøকের একটির সাথে অপরটির মাপের মিল নেই। এমনকি বøক তৈরীতে নি¤œ মানের মালামাল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে স্থানীয়দের।
অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, নদীতে জাল ঠেলা ও নদীর পাড়ের সাথে মৎস্য ঘের গড়ে তোলার ফলে নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব মৎস্য ঘের পরিচালনা করেন। যার ফলে স্থানীয়দের কোন কথায় তারা কর্ণাপাত করেন না তারা। যে কারণে নদী ভাঙ্গন থামছে না। তবে বর্তমান নদীতে জোয়ারে পানি বেশি হওয়ায় অধিকাংশ বেড়িবাধ নাজুক হয়ে দাড়িয়েছে। এতে যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে পারে হুমকির মুখে থাকা বসন্তপুর এলাকার ভেড়ীবাধ, শিবনগর ও টাউনশ্রীপুর এলাকার ভেড়ীবাধগুলো। তাই অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য দাবী জানানো হয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version