তালা প্রতিনিধি : তালা উপজেলার জেয়ালা গ্রামে হতদরিদ্র পরিবারের এক কিশোরীকে (১৬) জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পরবর্তীতে বিষয়টি মীমাংসার নামে ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে মারপিট করা হয়েছে বলে কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানিয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি চাঁপা দিতে একটি মহল ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে। শুক্রবার (২৯ মে) বেলা ১২টার দিকে তালা সদর ইউনিয়নের জেয়ালা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ অভিযুক্তসহ তার পরিবারের শাস্তির জোরালো দাবি জানিয়েছেন।
ওই কিশোরীর মা জানান, ‘শুক্রবার সকালে সবাই জমিতে কাজ করতে যান। তখন তার অসুস্থ মেয়ে বাড়িতে একা ছিল। বেলা ১২টার দিকে পার্শ্ববর্তী হায়দার সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (২৫) ঘরে ঢুকে তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিম কিশোরী জানায়, অসুস্থতার কারণে সে ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। সেই সুযোগ নিয়ে সোহাগ এসে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সোহাগ পালিয়ে যায়।
বিষয়টি জানাজানির পর সোহাগের পিতা হায়দার সরদার, মা মরিময় বেগম, ফুফু সাহিদা বেগম ও ফরিদা বেগম এসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে বলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে তারা কিশোরীকে প্রচন্ড মারপিট করে। পরবর্তীতে এসব খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের লোকজন জড়ো হয়ে সোহাগের বাড়ি ঘেরাও করে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মাদ আলী নিকারি জানান, ‘কিশোরীর পরিবার হতদরিদ্র এবং তারা একটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করে। ওই পরিবারের কিশোরী কন্যাকে ধর্ষণ এবং সালিশ করার নামে ডেকে নিয়ে সোহাগের মা ও ফুফুরা মারপিট করায় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে শুক্রবার রাতে সোহাগ ও তার পিতা হায়দার আলী বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে’।
তিনি আরও জানায় ‘সোহাগের পিতা হায়দার আলীর নামে এলাকায় এমন ধরনের অনেক অভিযোগ আছে। ইতিপূর্বে হায়দার আলী তার নিজ পুত্রবধূ ও ভাতিজি সহ এলাকার একাধিক মহিলাকে রাতের আঁধারে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে’। এদিকে শুক্রবার রাত থেকে তালার এক রাজনৈতিক নেতা ঘটনা নিয়ে বাড়বাড়ি না করার জন্য ওই কিশোরীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘দরিদ্র কিশোরীকে ধর্ষণ, মারপিট ও হুমকির ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামের সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে’।
এ বিষয়ে তালা থানার ওসি মো. মেহেদী রাসেল বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনার আংশিক খবর পেয়েছি। ভিকটিম কিশোরীর পরিবার মামলা করলে দ্রæত যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া সহ আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।