মাজহারুল ইসলাম : ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কবলে সাতক্ষীরার উপক‚লীয় এলাকায় বেড়ি-বাধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে অসংখ্য মৎস্য ঘের ও জনপদ। ফলে জেলার মৎস্য খাতে পৌনে ২শ’ কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃপক্ষ। আম্পানের প্রভাবে জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর, গবুরা ও আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর ভেড়ি বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করে পানি।
নদীর পানি ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল জোয়ারে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের দাঁতনেখালি, দূর্গাবাটি, পদ্মপুকুর ও গাবুরার বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ভেড়িবাঁধ ভেঙে মৎস্য ঘের সহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়।
এছাড়া আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের সুভদ্রকাটি, কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, হিজলা, দিঘলাররাইট, কোলা এলাকায় বেড়ি-বাধ ভেঙে মৎস্য ঘের সহ লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। তবে সেগুলি মেরামতের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো-২) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান জানান, ‘জেলায় ৩শ’ কি.মি. বেড়ি বাধ আছে। যার মধ্যে পূর্বের ঝুঁকিপূর্ণ সহ ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে জেলায় সর্বমোট ২৪ কি.মি. বেড়ি বাধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। এছাড়া আম্পানের প্রভাবে জেলার শ্যামনগর উপজেলা ও আশাশুনি উপজেলার কয়েকটি স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়ে প্লাবিত হয়েছে। এতে মৎস্য ঘের, ঘর-বাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ভাঙন কবলিত বেড়ি-বাধগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি-বাধগুলোও সংস্কার করা হবে’।
জেলা মৎস্য অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক মশগুল আজাদ জানান, ‘জেলায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে ৬৬ হাজার ৬শ’ ৫৭টি মৎস্য ঘের আছে। এরমধ্যে চিংড়ি ঘের সহ ১২ হাজার ২শ’ ৫৭ টি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৭৬.০৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে’। মৎস্য চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কোন সহযোগিতা করা হবে কি’না জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘জেলার মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে যদি কোন আশ্বাস দেয় তাহলে জানতে পারবেন’।