সরসকাটি (কলারোয়া) প্রতিনিধি: কলারোয়ার বসন্তপুর গ্রামের মাছের ঘের দখলের চক্রান্ত ফাঁস হয়ে গেছে। চারশ’ বিঘা জমির ধান ঘেরের পানির নিচে ইউএনও অফিসে এমন অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হয়ায় ওই চক্রটি এখন ভিন্ন কৌশলে ঘের মালিকের জান মালের ক্ষয় ক্ষতি করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের বসন্তপুর বিলে ১২০ বিঘা জমিতে করা মাছের ঘের পরিদর্শন করা হয়। এসময় ঘেরের মধ্যে থাকা জমির মালিকরা গরুর গাড়ীতে করে তাদের কেটে রাখা পাকা ধন সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। এসময় কৃষকদের ঘেরের মধ্যে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করতেও দেখা যায়।
ঘের মালিক বসন্তপুর গ্রামের জোহর আলীর মোড়লের ছেলে নজরুল ইসলাম জানান, গত ২০০০ সালের বণ্যায় কপোতাক্ষ নদ ও তার সাথে সংযোগ খালটি পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে যায়। ফলে কয়েক বছর ওই বিলে ধানসহ কোন ফসল হতো না। এসময় এলাকার জমির মালিকরা শুধু মাত্র বিলের পানি সেচ দিয়ে তাদের জমিতে ইরি বোরো ধান করার উপযোগী করে দেয়ার জন্য তাদেরকে অনুরোধ করেন। গত ছয় বছর আগে জমির মালিকদের একত্রিত করে ১০ বছরের জন্য লিখিত চুক্তির মাধ্যমে মাছের ঘের শুরু করা হয়। চুক্তি মোতাবেক জমির মালিকদের নিয়মিত হারির টাকাও পরিশোধ করা হচ্ছে। এমনকি কৃষকদের সুবিধার জন্য ইরি বোরো মৌসুমে ধান চাষের জন্য পানি সেচেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এর মধ্যে একই গ্রামের মোস্তাজুল ইসলাম ভোলার ছেলে বিএনপি কর্মী মাহবুবুর রহমানসহ তার পক্ষের ৫/৬ ব্যক্তি ঘের দখলে নেয়ার পায়তারা শুরু করে।
ঘেরের মধ্যে জমি আছে এমন সব জমির মালিকরা জানান, তারা নজরুল ইসলাম, আরিজুল ইসলাম ও মোখলেছুর রহমানকে মাছের ঘের করার জন্য জমি লীজ দিয়েছে। ঘের উপর এলাকার মাহবুবসহ কয়েক ব্যক্তির কু-নজর পড়ে। তারা ঘেরের পানির নিচে ৪০০ বিঘা জমির ধান এমন মিথ্যা অভিযোগে প্রশাসনের নিকট মিথ্যা অভিযোগ করে। যা তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়।
এদিকে ঘের নিয়ে এলাকার শান্তি যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য গত বৃহস্পতিবার ইউনিয়র আওয়ামীলীগের সভাপতির নেতৃত্বে ওই ঘেরের পাশে স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে এক বৈঠক হয়। সেখানে ঘেরের মধ্যে থাকা কৃষকরা জানান, খাল খনন করা না হলে ঘেরের জমিতে কোন ফসল উৎপাদন হবে না। যেহেতু সরকার বিলের সাথে সংযোগ খালটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি তাই ঘের বা বিলের পানি বেরিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এ অবস্থায় নজরুলসহ তার সাথে থাকা আরো দুই ব্যক্তি ঘের না করলে কৃষকে ঘরে ধানসহ কোন ফসল উঠবে না। তাদের না খেয়ে মরতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মাষ্টার আজিজুর রহমান বলেন, খালটি খনন করা না হলে বসন্তপুর বিলে ধানের আবাদ করা যাবে না। আগে খালটি খনন করতে হবে। এ অবস্থায় স্থানীয় গ্রামবাসিসহ ঘেরের জমির মালিকরা ঘের করার পক্ষে মতামত দিয়েছে। তাই নজরুল ইসলামরাই ডিট অনুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত ঘের করার অধিকার রাখেন।
অন্যদিকে ঘের নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ কারী মাহাবুবুবর জানায়, ঘের করতে দেয়া হবে না। এক বার হেরে গেলেও সামনের বার সে জিতে যাবে। কারণ হিসেবে সে জানায়, ঘেরের মধ্যখানে পাটের বীজ বুনেছি। পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ৪০০ বিঘা জমি ঘেরের পানির নিচে দেখিয়ে ফের অভিযোগ দেয়া হবে। ঘেরের মধ্যে তার নিজের কোন জমি না থাকলেও তার ফুফার ১৮ কাঠা জমি আছে বলে সে জানায়।
এ নিয়ে জয়নগর ইউপি চেয়ারম্যান ছামছুদ্দীন আল মাসুদ বাবু জানন, এলাকার বেশীরভাগ কৃষক বা চাষীরা যে দিকে আমিও সেই দিকে। তার নিজের কোন মাতামত নেই।