ন্যাশনাল ডেস্ক : জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৪ মে) বিকেলে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি।
আনিসুজ্জামানের ছেলে আনন্দ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৯ মে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাজধানীর ইউনিভার্সেল কার্ডিয়াক হাসপাতাল থেকে সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়।
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটের প্রধান কর্নেল সৈয়দা আলেয়া সুলতানার নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের একটি দল তাকে সেবা দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত
চলে গেলেন জাতীয় এই অধ্যাপক।
রক্তে সংক্রমণের সঙ্গে পূর্বের নানা জটিলতা নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সী এই অধ্যাপককে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। ইমেরিটাস এই অধ্যাপক দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ, লেখক ও গবেষক, ভাষা সংগ্রামী, মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণকারী, সংবিধানের অনুবাদক, দেশের সব প্রগতিশীল আন্দোলনের অগ্রবর্তী মানুষ ছিলেন।
১৯৫৬ ও ১৯৫৭ সালে স্নাতক সম্মান এবং এমএ-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন আনিসুজ্জামান। অনার্সে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার কৃতিত্বস্বরূপ ‘নীলকান্ত সরকার স্বর্ণপদক’ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। এছাড়া জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত গণআদালতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, অলক্ত পুরস্কার, আলাওল সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রিতে ভূষিত হয়েছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘পদ্মভূষণ’ পেয়েছেন।
সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তাকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০১৮ সালের ১৯ জুন বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।