এপ্রিল ৫, ২০২০
খলিষখালীতে করোনায় ঘরে থাকা মধ্যবিত্ত পরিবারে হতাশা
খলিষখালী (পাটকেলঘাটা) প্রতিনিধি: বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে যখন সারাদেশ স্তব্ধ তখন খলিষখালীতে নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে অনিশ্চিত আগামীর চিন্তায় দিন কাটছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট বন্ধ থাকায় উপার্জনের রাস্তা বন্ধ। বাজার খরচ, চিকিৎসা খরচ, বাচ্চাদের স্কুল ফি দিয়ে বাড়তি কোন টাকা থাকে না তাদের হাতে। তাদের কোন সঞ্চয় নেই। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিরা ঘরবন্দি হয়ে পড়াতে হাতে যে কটা টাকা আছে তাই ভেঙ্গে চলছে সংসার। মধ্যবিত্ত পরিবারের যুব মহিলা বা বিধুবা নারীরাও সহায়তার জন্য হাত পাততে পারছেন না। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশের অনেক স্থানে অঘোষিত লকডাউন। খলিষখালী সহ সারাদেশে বন্ধ করা হয়েছে সকল বিপণী বিতান ও শপিং মল। নিত্যপন্যের দোকান ছাড়া বন্ধ সকল দোকান। এদিকে গণপরিবহনও বন্ধ ২৬ মার্চ থেকে। সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত। ফলে ঘরবন্দি হয়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ। এই সঙ্কটকালীন সময়ে খলিষখালীতে হতদরিদ্র নিম্নবিত্তের মানুষরা সরকারি-বেসরকারি নানা রকম সহায়তা পাচ্ছেন। সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে তাদের বাসায় বাসায়। কিন্তু বিপদে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। তারা না পারছেন কারো কাছে সহায়তা চাইতে, না পারছেন ঘরে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে দিনযাপন করতে। কারণ তাদের বেশির ভাগেরই হাতে পর্যাপ্ত টাকা নেই, কাজ বন্ধ থাকায় আয় করার পথও নেই।নিম্নমধ্যবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তের পরিবারের আয়ের মাস শেষে টাকার অবশিষ্ট কিছুই থাকে না হাতে। নানা কৌশলে মাস পার করেন তারা। কিন্তু বর্তমানে করোনায় উদ্ভূত সঙ্কটে দিশেহারা পরিবারের মানুষজন। দেশের এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রার্থনার বাইরে কোন পথ দেখছেন না তারা। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অপেক্ষায় দিন কাটছে মানুষগুলোর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খলিষখালীর রাঘবকাটী গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের এক বাসিন্দা জানান, তাঁর ঘরে চাল নেই। নেই কোন ইনকাম। অনেকদিন যাবত ঘরে বসে। তেল-লবণের বোতল ও বয়ামের তলাও দেখা যাবে আর দু-এক দিনের মধ্যে। তিনি বললেন, নিম্নবিত্তের লোকজন তো সরকারি ত্রাণ পাচ্ছে, বেসরকারি সহায়তা পাচ্ছে, কিন্তু মধ্যবিত্তের কী হবে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খলিষখালী গ্রামের আরেক বাসিন্দা জানান, আর্থিকভাবে পরিবার নিয়ে ভালোই ছিলেন তিনি। মা-বাবা, মা হারা দুই ভাইপো, পাগোল এক ভাই ও স্ত্রীকে নিয়ে কোন ইনকাম ছাড়াই আছেন বাসায়। কিন্তু তার কোনো সঞ্চয় নেই। গত ১০ দিন ধরে দোকান বন্ধ। হাতে কিছু টাকা ছিল তা দিয়ে কিছু বাজার করেছেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে অন্ধকার দেখছেন চোখেমুখে। কীভাবে সংসার চালাবেন, সেই চিন্তায় ঘুম আসে না তার। স্ত্রী ও বাবা-মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে চাপা কান্না ছাড়া কিছুই করার নাই। 8,579,069 total views, 6,839 views today |
|
|
|