Site icon suprovatsatkhira.com

লকডাউনে নষ্ট হচ্ছে পান: খেশরার পান চাষিদের মাথায় হাত

খেশরা (তালা) প্রতিনিধি : করোনা ভাইরাসের লাগামহীম বিস্তারে কাবু সারা বিশ্ব মতো বাংলাদেশেও। থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতির চাকাও। এসবের মধ্যে ঝুকি নিয়ে চলছে কৃষি উৎপাদন। স্থবির শহর তাই থমকে গেছে গ্রামও। দেশের যোগাযেগ ব্যবস্থার ক্রমাবতি ও বিপনন ব্যবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পড়ায় দিশেহারা পড়েছে সাতক্ষীরার কৃষককুল।

গ্রাম, শহর ও আলোর ঝলকানি দেয়া নগর বন্দরও লগডাউন। আর একের পর এক লকডাউনের ফলে নষ্ট হচ্ছে তালার খেশরা এলকার কৃষকের উৎপাদিত পান। করোনায় বিপাকে পড়েছে এলকার পান চাষিরা। করোনায় পরিস্থিতিতে খেশরার পান চাষিদের এখন স্বপ্নভঙ্গ।

পানের বাজার বন্ধ থাকায় পান চালান করতে বেশ ভুগান্তি হচ্ছে এসব পান চাষিদের। খেশরার শাহাজাতপুর,ডুমুরিয়া,মুড়াগাছা,সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এ পানের চাষ লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে খেশরা ও শাহাজাতপুরের একটা অংশ পান চাষের উপর নির্ভরশীল।

লকডাউনে এই চাষীদের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে বেঁচে থাকলেও পরবর্তী সময়ে অর্থের অভাবে পান চাষ করতে পারবেন না বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। সারাদিন বরজে কাজ করে সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার আগেই পান নিয়ে চাষিরা হাজির হয় খেশরার ফারুক মার্কেটে।

চড়াদামে বিক্রি করে নিয়ে আসা পানগুলো।তবে বর্তমান করোনার কারনে চড়া দাম তো দূরে থাক সর্বনিম্ন যে দাম পেলে বাঁচবে তারা সেটিও পাচ্ছে না বলে দেখা গেছে।যে বড় পান তারা ২০০ থেকে ২৩০ টাকা বিক্রি করছিল সে পান এখন ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।এবং ছোট পান গুলো অন্য সময় ৫০ বা ৫৫ টাকা বিক্রি করা হলেও সেটার বর্তমান বাজার এখন ২০ থেকে ২৫ টাকা।
খেশরার পূন্ডরিক পাড়ায় পান চাষি বাবু বিক্রম মন্ডল জানান,পান থেকেই আমার পরিবারে জীবিকা চলে।আমার মত এমন কয়েক হাজার পানচাষী আমাদের এলাকা সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় পানচাষ করে থাকে। সকল পানচাষীরা তাদের পান পার্শ্ববর্তী বাজার সহ কপিলমুনি, ঝাউডাঙ্গা, চুকনগর, ঢাকা পান চালান করতো বা বিক্রির জন্য বাজার জাত করতো।কিন্তু করোনার প্রভাবে সারাবাংলাদেশে লকডাউনের জন্য সকল পান চাষীরা পান বাজার জাত করতে পারছে না।এমন অবস্থাতে দুই এক স্থানে জীবনের ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে পান বিক্রি করতে যাচ্ছে কিন্তু বাজার মূল্য খুবই কম।

এদিকে পানচাষী রুহুল আমিন মালি বলেন, ক্রেতা সমাগম না থাকার কারনে পানের বাজার নিম্নমুখী। এমন অবস্থায় বৈশাখ মাসে জমির খাজনা,হালখাতা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। আবার জৈষ্ঠ্য মাসে পানের বরজের পিছনে খরচ হবে বিঘা প্রতি পঞ্চাশ হাজার মতো। সব চাষীদের মাথায় এখন একটাই চিন্তা কিভাবে ঋন শোধ করবে আর কিভাবে বরজ পাঠ করবে।যে পরিমান সঞ্চয় ছিল তাও শেষ। খাদ্য সংকট দেখা দিছে প্রায় পরিবারে। অধিকাংশ পান চাষি নিম্ন মধ্যেবিত্ত এবং মধ্যেবিত্ত হওয়ার কারনে ত্রান নিতে পারেনা আবার খাবার জোগাড় করতেও পারছে না।

এদিকে পান ব্যবসায়ী বাবু কল্যাণ দাশ বলেন,আমরা এই লকডাউনে পান কিনে নিয়ে বিক্রি করতে পারছি না।যদিও আমরা এখানে এসে অল্প কিছু পান কিনে নিয়ে যাচ্ছি তবুও আমরা লাভ করতে পারছি না।বেশিরভাগ সময় যে টাকা দিয়ে কিনছি সে টাকাও বিক্রি করতে পারছি না।এজন্য আমরাও বিপদে আছি।এই ব্যবসার উপরেই আমাদের সংসার চলে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,এ বিষয়টি আমি জানলাম।আমি আমার উপরের কর্মকর্তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।

সবমিলে দেখা গেছে খেশরার বড় সংখ্যক পান চাষি বিপদে আছে।তারা স্থানীয় প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।যাতে করে অর্থনৈতিক ভাবে বড় বিপর্যয় নেমে না আসে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version