গাজী আল ইমরান: শ্যামনগর উপজেলার সকল মানুষের প্রাণের দাবি শ্যামনগর উপজেলা সদরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া আদি যমুনা পুন: খনন ও দু পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নোটিশ প্রদান করা হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। শ্যামনগর সদর ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জহুরুল হায়দার বাবুর প্রচেষ্টায় সদরের আদি যমুনার দুই পাশ পরিষ্কার ও পাড় বাধাইয়ের কাজ চলমান থাকলেও উচ্ছেদ হচ্ছে না অবৈধ স্থাপনা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ করা হলে অজ্ঞাত কারণে তা কার্যকর করা হয়নি। ফলে শ্যামনগরের মানুষ নদী নিয়ে যে আশায় বুখ বেঁধেছিলো তা আজ ধোয়াশার আধারে নিমজ্জিত। আর কখনো আলোর মুখ দেখবে না বলে মনে করছেন না অনেকেই। নদী শুকিয়ে যাওয়া কেবল জলবায়ু বদল নয়, কৃষি, জীবন জীবিকা, স্বাস্থ্য ও প্রাণ বৈচিত্র্যের অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। আদিকাল থেকে যমুনা নদীর উপর নির্ভরশীল ছিল এ অঞ্চলের কৃষি, পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাণ বৈচিত্র্য, জীবন জীবিকা, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। যুগ যুগ ধরে যমুনা নদী সংযোগ এলাকায় কৃষক, জেলে, কামার, কুমার, তাঁতি, কবিরাজ, মৌয়াল, বাওয়ালসহ বাঙালী ও আদিবাসী গ্রামীণ জনগণ এক স্থানিক প্রতিবেশ নির্ভর জ্ঞান চর্চার মধ্য দিয়ে রক্ষা করে চলেছিল শস্য ফসলের জাত, কুড়িয়ে পাওয়া খাদ্য ভান্ডার, গৃহস্থলী উপকরণসহ নানান গ্রামীণ পথ ও প্রযুক্তি। কিন্তু কালক্রমে জলবায়ু পরিবর্তন, ৬০ এর দশকের উপক‚লীয় বাঁধ তৈরি, নদী দখল ও দূষণ, নদী সংযোগ খালগুলো ভরাট, অবৈধ দখল ও অপরিকল্পিত চিংড়ী চাষের কারণে ঐতিহাসিক যমুনা নদী ও নদী নির্ভর মানুষের জীবনযাত্রা বর্তমানে ভয়াবহভাবে বিপন্ন। জলাবদ্ধতা নিরসন ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছুটা হলেও আদি যমুনাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এমতাবস্থায় আগামীর সুন্দর সোনার শ্যামনগর ও নদী কেন্দ্রিক শহর গড়তে যমুনার দু পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং যমুনা খনন অতীব জরুরী বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
কাকশিয়ালী থেকে মাদার নদী পর্যšত্ম ২৬ কিলোমিটার যমুনা নদী বর্তমানে ২৭ খন্ডে বিভক্ত। ফলে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে শ্যামনগর সদর ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বর্ষা মৌসুমে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্তসহ জনসাধারণের জানমালের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। এজন্য অতিদ্রæত বিপন্ন যমুনা নদী পুনঃখনন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, নদী সংযোগ খালসমূহ পুনঃখনন ও লবণ পানি মুক্ত, পরিকল্পিত উপায়ে যমুনার দুই তীরে বনায়ন, স্থানীয় মাছের অভয়াশ্রমসহ অতীতের কৃষিপ্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর জীবনযাত্রা কিছুটা হলেও পুনঃগঠনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আদি যমুনা খনন এবং দু‘পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে এবং এ বিষয়ে আমি শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার এর সাথে কথা বলবো।
আটকে আছে আদি যমুনার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/