পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পূর্ব ধাওয়া গ্রামে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় করোনাভাইরাস সন্দেহে ওই স্কুলছাত্রে বাড়িসহ গ্রামটির ১৫০ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে ওই স্কুলছাত্রে মৃত্যু হয়। নিহত ওই স্কুলছাত্র এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু আলী মোহাম্মাদ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নিহত স্কুলছাত্রটি মৃত্যু করোনায় আক্রান্ত হয়ে হয়েছে কি-না বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ আছে। তবুও এর প্রভাব বিস্তারের ঝুঁকি এড়াতে সেখানকার লোকজনকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল আলম বলেন, সর্দি-জ্বরে স্কুলছাত্রের মৃত্যুতে করোনা সন্দেহে ওই স্কুলছাত্রের বাড়িসহ আশপাশের বাড়ির লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই স্কুলছাত্র অসুস্থ হওয়ার পর সম্ভাব্য যেসব বাড়িতে ঘোরাঘুরি করেছে সেসব বাড়ির লোকজনকেও একইভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। মৃত স্কুলছাত্রের পরিবারের প্রয়োজনীয় সব বাজার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। আর স্কুলছাত্রটির নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত এ প্রক্রিয়ায় ওই গ্রাম চলবে। তবে ফলাফল নেগেটিভ হলে হোম কোয়ারেন্টিন উঠিয়ে নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ওই উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এইচএম জহিরুল আলম বলেন, গত চারদিন আগে সর্দি-জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হয় ওই স্কুলছাত্র। মঙ্গলবার সকালে তার পরিবারের পক্ষ থেকে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে বিষয়টি জানানো হলে চিকিৎসকরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দেন। কিন্তু তার পরিবার তাকে বাড়িতে রেখে স্থানীয়ভাবে সাধারণ চিকিৎসা করান। দুপুরে হঠাৎ তার মৃত্যুর খবর পাই। তবে স্কুলছাত্রটির মৃত্যু করোনার কারণে কি-না তা এখনো নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ঝুঁকি এড়াতে মৃত স্কুলছাত্রের বাড়িসহ পার্শ্ববর্তী বাড়িগুলো লকডাউন করাসহ স্থানীয় সবাই কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছিদ্দিকুর রহমান টুলু বলেন, দুপুরের পর উপজেলা প্রশাসেনের কর্মকর্তারাসহ পুলিশ এসে গ্রামটির পূর্ব মোল্লার খাল থেকে জানালার খাল পর্যন্ত প্রায় ১৫০ বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই বাড়ির ও আশপাশের বসতি এলাকা লকডাউন করে সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এসময় তিনি লকডাউনের আওতায় থাকা পরিবারের সব খাবার সরবরাহের দায়িত্ব নেন।