ডেস্ক রিপোর্ট : সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় সুদ ব্যবসায়ী চক্রের কাছে জিম্মি অসহায় দরিদ্র মানুষ। সুদের টাকা দিতে দেরী হলে মারধর ও নির্যাতন করার অভিযোগ সুদ ব্যবসায়ী কবিরুল ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে। ফলে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে একাধিক ব্যক্তি ও পরিবার। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে সমবায় অফিস, জেলা প্রশাসন, দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সুদের ব্যবসা করছেন রাজার বাগান এলাকার বাসিন্দা প্রিয়া, তার স্বামী কবিরুল ইসলাম ও সোনা ওরফে ঠাকুর মিলে একটি গ্রæপ। তারা সুদ হিসেবে ১ হাজার টাকায় প্রতি দিন ১০ টাকা নেয়। ১০ হাজার টাকায় দিনে নেয় ১শ করে টাকা। এই গলাকাটা সুদ ব্যবসায়ীদের কাছে স্থানীয় দরিদ্র জনসাধারণ অতি প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। একবার যদি কেউ এ ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাকে আর বের হবার সুযোগ নেই। সুদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সর্বস্ব শেষ করে এলাকা ছেড়েছেন একই এলাকার অশ্বম দাস, কৃষ্ণদাস, স্বপন, কল্পনা, খিতিস ও গাফ্ফারসহ অনেকে। সুদ ব্যবসায়ীদের নির্যাতনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে নওয়াজ আলীসহ প্রায় ৩০ জন। এই চক্রের হাত থেকে প্রতিকার পেতে সরকারে সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ মোড়ের একাধিক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের সুযোগে সুদে টাকা ধার দিয়ে সাদা চেকে সইসহ হাতিয়ে নেয়া হয় জমির দলিল। সুদের টাকা দিতে না পারলে চেকে ইচ্ছামতো মোটা অঙ্কের টাকা বসিয়ে মামলা দিয়ে হয়রানিসহ চলে নানাভাবে নির্যাতন। এই সুদ চক্রের জালে আটকে অনেকে হারিয়েছে বসত ভিটা, আবার অনেকে ছেড়েছে এলাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ভুক্তভোগী বলেন, সাংসারিক অতি প্রয়োজনে প্রিয়ার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেই। কয়েক দিনের মধ্যে সুদাসল মিলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হওয়ায় আমি তাকে মাফ করে দিতে বলি। কিন্তু তাকে সেখান থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছি কিন্তু তার ঋণ এখন শোধ হয়নি। প্রিয়ার স্বামী কবির আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় থানা পুলিশ তার হাতে থাকায়। আমাকে দুই বার জেলা খাটিয়েছে। মাকে মারধর করেন। আমি এর বিচার চাই।
এব্যাপারে প্রিয়া ও তার স্বামী কবিরুল এসব অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, আমরা মানুষে বিপদে আপদে টাকা ধার দেয়। তার জন্য অল্প কিছু লাভ নেই। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেটা সত্য না। তবে সমবায় থেকে তাদের কোন অনুমোদন নেই বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জেলা সমবায় কর্মকর্তা রাম প্রসাদ ঢালী বলেন, শুনেছি সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় প্রিয়-কবিরুলসহ বেশ কয়েকজন সুদি ব্যবসার সাথে জড়িত। যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
সদর উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। যারা সুধের ব্যবসার সাথে জড়িত সরকার তাদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে। ইতোমতো সুদি কারবারীদের ধরতে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছে বলে গণমাধ্যমে জেনেছি।