স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবির স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে এক সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তিনি একটি মাদ্রাসার সভাপতির পদও বাগিয়ে নেন। পরে তিনি একছত্র ভাবে মাদ্রাসা ফান্ডের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ঘটনায় সদর থানায় এক জনের নাম উল্লেখসহ তিন জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী শহরের সুলতানপুর এলাকার গোলাম খয়বার এর ছেলে এম খলিলুল্লাহ ঝড়–।
মামলার বাদি ও থানায় দায়ের করা এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সদরের মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার গভর্নিং বর্ডির সভাপতি হতে শহরের রসুলপুর গ্রামের মৃত কোমর উদ্দিন সরদারের ছেলে অধ্যাপক আবু আহমেদ ও মাহমুদপুর গ্রামের মৃত মোতালেব মোড়লের ছেলে মাওলানা হাফিজুর রহমানসহ আরো ২/৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিরা সদর এমপির স্বাক্ষর জাল করে মাদ্রাসার ক্ষতি সাধন করতে গভীর যড়যন্ত্র করে মাদ্রাসার অর্থ আত্মসাৎ করার লক্ষে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। গত ইং-২৩/১১/২০১৬ তারিখে সাতক্ষীরা সদর এমপির স্বাক্ষর জাল করে গর্ভনিং বর্ডির সভাপতি হয় অধ্যাপক আবু আহমেদ। জালিয়াতি করতে সহযোগিতা করে মাওলানা হাফিজুর রহমানসহ আরো কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে সভাপতির পদ বাতিল করতে সাতক্ষীরা সদর এমপি মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর একটি ডিও লেটার দেন। তখন মাদ্রাসা বোর্ড আবু আহমেদ’র সভাপতি পদ বাতিল করে। তখন আবু আহমেদ বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করে। সেই মামলাটি বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দেয়। বিষয়টি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করলে সদর এমপির সই জাল করা হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দেন। এ ব্যাপারে মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নাসির উদ্দিন বলেন, মাদ্রাসার নামে অনেক সম্পদ থাকায় প্রতারক ও জালিয়াত অধ্যাপক আবু আহমেদ মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ করতে গভনিং বর্ডির সভাপতি হয়েছিল। আবু আহমেদ ও ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা হাফিজুর রহমানকে সাথে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আমাকে আড়াই বছর সাময়িক বহিষ্কার করেছিল। আবু আহমেদ মাদ্রাসায় ২ বছর ২ মাস সভাপতি থাকাকালীন মাদ্রসার আয়-ব্যয়ের কোন হিসাব নেই। একইভাবে ২০১০ সালে সাতক্ষীরা সিটি কলেজে জোর করে দখল করে অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে ঐ আবু আহমেদ প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তার সময়েও সিটি কলেজের আয়-ব্যয়ের কোন রেকর্ড রাখেনি। সব ফাইল পত্র গায়েব করে ফেলেছে। এটা আবু আহমেদ’র বরাবরের চরিত্র। মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা সম্পত্তি থেকে বছরে সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা হারি পায়। ২ বছর ২ মাসে তার সময়ে মাহমুদপুর আমিনিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে ১২/১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন অধ্যাপক আবু আহমেদ। এ ব্যাপারে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিআইডির এক্সপার্ট দিয়ে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে সচেতন মহলের দাবি আবু আহমেদ’র মত জালিয়াত ও প্রতারককে সাতক্ষীরার সকল কর্মকান্ড থেকে বাদ দিয়ে আগাছা মুক্ত করা হোক। সেই সাথে সমাজ থেকে এ ধরনের জালিয়াত আর্থ আত্ম সাৎ কারীকে আইনের আওয়ায় এনে সাতক্ষীরাবাসীকে শান্তিতে ও স্বস্তিতে রাখতে দৃষ্ট্রান্তমূল শান্তির ব্যবস্থা করা হোক। যেন আবু আহমেদ’র মত আর কোন জালিয়াত প্রতারক সাতক্ষীরায় সৃষ্টি হতে না পারে।
সদর এমপির স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাৎতের ঘটনায় মামলা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/