ডেস্ক রিপোর্ট : সাতক্ষীরার তালায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়ে এক অসহায় বৃদ্ধার রেকর্ডীয় সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তালা উপজেলার আটরাই গ্রামের নজির মাহমুদ এর স্ত্রী ফাতেমা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তালা আটারই মৌজায় এস এ ৮৬২, জে এল ১৪২, ডিপি-৭১০, সাবেক দাগ নং- ৫৯/৮৩, হাল দাগে ৪৩ শতক জমি এস এ রেকর্ডীয় মালিকদের কাছ থেকে ১৮/০২/১৯৮০ তারিখে ১১২৬, ১১২৭ নং কোবলা দলিল মূলে এবং ০৫/০৪/১৯৮৬তারিখে ২৩৪৭ নং কোবলা দলিলে আমার স্বামী নজির মাহমুদ ক্রয় করেন। উক্ত সম্পত্তি আমার স্বামী নজির মাহমুদের নিজ নামে বর্তমান জরিপে রেকর্ড হয়েছে এবং সেই মোতাবেক খাজনা দাখিলাও সম্পন্ন করা হয়। আমাদের কোন ছেলে সন্তান না থাকায় পরবর্তীতে উক্ত সম্পত্তি গত ২৮/০৭/২০০৮ তারিখে ৩৭৭৪ নং দলিলে আমার (স্ত্রী) এবং ৫ মেয়েদের নামে দানপত্র করে দেন আমার স্বামী নজির মাহমুদ। এরপর থেকে আমরা উক্ত ৪৩ শতক সম্পত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছিলাম। কিন্তু সম্প্রতি এলাকার মৃত. নিজাম শেখের ছেলে ভূমি-দস্যু মোহাম্মদ আলী শেখের নেতৃত্বে মৃত. আনছার মাহমুদের ছেলে কামাল মাহমুদ, জুলফিকার মাহমুদ, গফুর মাহমুদ, খোকন মাহমুদ, কামরুল মাহমুদ, মৃত. কেরামত মাহমুদের ছেলে নওশের মাহমুদ এবং মৃত. জব্বার শেখের ছেলে সবুর শেখ আমাদের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা একটি জাল এস এ এবং সি এস রেকড সৃষ্টি করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান করার দোহাই দিয়ে ওই সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে। অথচ সাতক্ষীরা রেকর্ড রুমে ওই এস,এ এবং সি,এস এর কাগজ নেই। বর্তমান জরিপে সেটি ডাংগা। এছাড়া উক্ত সম্পত্তিতে তাদের কোন অংশ নেই। শুধুমাত্র গায়ের জোরে উক্ত সম্পত্তি উল্লেখিত ব্যক্তিরা দখলের চক্রাšত্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এবিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলেও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দোহাই দেওয়ার কারণে কোন কাগজপত্র না থাকার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কেউ সাহস দেখাচ্ছেন না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার সম্পত্তি আমি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেবো কি না সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। অথচ আমরা অসহায় ও দুস্থ প্রকৃতির মহিলা হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে আমাদের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এমনকি উক্ত সম্পত্তিতে আমাকে বা আমার পরিবারের কোন সদস্যকে যেতে দিচ্ছে না। সেখানে গেলে খুন জখমের হুমকি ধামকি প্রদর্শন করে যাচ্ছে তারা। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে দখলের চেষ্টা করায় এলাকাবাসীও তাদের পক্ষে কথা বলছেন। এলাকাবাসী সকলেই অবগত উক্ত সম্পত্তির রেকর্ডীয় মালিক আমরা। কিন্তু ধর্মের দোহাই দেওয়ায় স্পর্শকাতর হওয়ায় মানুষ সত্য যেনেও তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। ফাতেমা বেগম আরও বলেন, আমার স্বামী নজির মাহমুদ বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। এছাড়া আমার কোন ছেলে সন্তান নেই। ৫জন মেয়েরা স্ব-স্ব শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। আমার ছেলে সন্তান না থাকায় উক্ত সম্পত্তি আমার এবং মেয়েদের নামে লিখে দেওয়ার পরই উল্লেখিত দখলদাররা এ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। আমি ওই সম্পত্তিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করি। অথচ মোহাম্মাদ আলী গংরা লাভের বশবর্তী হয়ে উক্ত সম্পত্তি দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি একজন অসহায় বৃদ্ধা মহিলা হিসেবে উক্ত সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি ও সাতক্ষীরা সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তালায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের দোহাই দিয়ে সম্পত্তি দখল চেষ্টার অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/