Site icon suprovatsatkhira.com

আশাশুনিতে রাজাকারের তালিকায় দুই ব্রাহ্মণ! : সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনিতে রাজাকারের তালিকায় দুই হিন্দু ব্রাহ্মণ, এক মুক্তিযোদ্ধার বাবাসহ তিনজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার নাম অন্তভর্‚ক্ত হওয়ার প্রতিকারে আশাশুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও ইউএনও’র মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন খাজরা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় ঘোষিত রাজাকারের তালিকায় গদাইপুর গ্রামের ফয়জুদ্দীন সরদারের ছেলে মোজাহার সরদার, তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের সতিন্দ্র নাথ মূখার্জীর ছেলে প্রয়াত স্কুল শিক্ষক সুবোধ মূখার্জী, অক্ষয় মূখার্জীর ছেলে প্রয়াত স্কুল শিক্ষক জিতেন্দ্র নাথ মুখার্জী, গদাইপুর গ্রামের সৈয়দ আলী সরদারের দুই ছেলে জিয়াদ সরদার ও মিয়ারাজ আলী সরদারের নাম অন্তভর্‚ক্ত হয়েছে। যাদের সবার গ্রামের ঠিকানা আশাশুনি ব্যবহার করা হয়েছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আশাশুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে খাজরা ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবাদুল মোল্যার উপস্থিতিতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রইচ উদ্দীন (গেজেট নং- ৩৬)। তিনি বলেন- মোজাহার সরদার ছিলেন একজন সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি বিভিন্ন সময় আমাদের প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন। তাকে আসামি করে মৃত নওশের আলী সরদারের ছেলে নাজিম উদ্দীন সাতক্ষীরা আদালতে সিআরপি- ১৫১/২০০৯ নং একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালতের বিচারে মোজাহার সরদার নির্দোষ প্রমাণিত হলে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে উক্ত নওশের আলী এলাকায় চোর নওশের বলে পরিচিত ছিল। সত্তর সালে অস্ত্র-গুলি সহ সে পুলিশের ধরা খেয়ে নিখোঁজ হয়। সে কোন মুক্তিযোদ্ধা ছিল না।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সেক্টর কমান্ডার রহমাতুল্লাহ দাদু ভাই মোজাহার সরদারকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা এবং তিনি তার সাথে তিন মাস ছিলেন উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র প্রদান করেন। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলা ইউনিট মোশারফ হোসেন মশু, সাবেক আশাশুনি উপজেলা কমান্ডার আব্দুল হান্নান এবং আব্দুর রহমান, যুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজল নগর ক্যাম্প ইনচার্জ এসএম আব্দুল বারী, খাজরা ইউনিয়ন কমান্ডার এবাদুল মোল্যাসহ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা মোজাহার সরদারকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন বলে স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। মোজাহার সরদারের ছেলে শাহ নেওয়াজ ডালিম উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, যুবলীগের আহŸায়ক, আ’লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমান কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে এবং নৌকার মনোনয়ন নিয়ে খাজরা ইউপির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত: হয়ে একটি কুচক্রীমহল ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। অন্যদিকে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত স্কুল শিক্ষক সুবোধ মূখার্জী ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী জিতেন্দ্র নাথ মূখার্জী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন। চুড়ান্ত বিজয়ের পরই তারা দেশে ফিরে আসেন। তারা এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমি দান করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন। জিয়াদ আলী সরদার ও মিয়ারাজ আলী সরদার ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী। জিয়াদ আলীর ছেলে শাহাবুদ্দীন প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি একজন ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। তার বাবাকেও রাজাকারের তালিকায় অন্তভর্‚ক্ত করা হাস্যকর। একটি মহলের ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ভুলবশত: রাজাকারের তালিকাভুক্ত হওয়া উপরোক্ত ৫ জনের নাম তালিকা থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে তিনি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডলিম, মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী, দীনেশ চন্দ্র মন্ডল, আব্দুল কুদ্দুস, শিক্ষক অনল মূখার্জী, মিহির মূখার্জীসহ এলাকার মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনকারীরা ভুলবশত: রাজাকারের তালিকাভুক্ত হওয়া উপরোক্ত ৫ জনের নাম তালিকা থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version