Site icon suprovatsatkhira.com

শ্যামনগর সদর হাসপাতাল জরাজীর্ণ : হেলমেট পরে চলতে হয় রোগীর স্বজনদের

গাজী আল ইমরান শ্যামনগর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলার সর্ব দক্ষিনের উপজেলা শ্যামনগর, যেটি উপক‚লীয় অঞ্চল বলে স্বীকৃত। আর এই উপক‚লীয় অঞ্চলের ১২টি ইউনিয়নের সাড়ে চার লক্ষ মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী শ্যামনগর সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থা, এরই মধ্য দিয়ে চলছে অসুস্থ রোগীদের সেবা প্রদান। আইলা, সিডর, বুলবুল আক্রান্ত বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের এ উপজেলায় একমাত্র হাসপাতালটি স্বাস্থ্যসেবায় কয়েকবার সুনামের সহিত গৌরব অর্জন করলেও তা আজ জরাজীর্ণ, ভবন সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অসহায়, গরিব-দুঃখী মানুষ। শ্যামনগর থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রায় ৫৫ কি: মি: দূরে হওয়ায় দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে সাধারণ মানুষ জেলা সদরে যেয়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে অক্ষম। তাছাড়া দূরের পথে যাবার মৃত্যু ঝুঁকি, যাতায়াত খরচ জোগাড় ইত্যাদি সমস্যা অতিক্রম করে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে না। যে কারণে জীবন বাজি রেখে জরাজীর্ণ ভবনের ছাদের নীচে স্বাস্থ্যসেবা নিতে বাধ্য হচ্ছে নিন্ম আয়ের মানুষ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও রোগীর আত্মীয় স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, জীবন বাঁচাতে এসে জীবন চলে যায় কিনা সে আতঙ্কে থাকতে হয় সবসময়। হাসপাতালের ভিতরে রোগীরা ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে পারে না, উপরের ছাদ থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে বালু কণা। দেখা যাচ্ছে কোথাও কোথাও ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। ডাক্তার নার্সদের সেবার প্রচেষ্টা থাকলেও আমাদের জরাজীর্ণ ছাদের নীচে থাকতে ভয় করে। কখন না উপর থেকে ছাদ ভেঙে পড়ে মাথার উপরে, চলে যায় প্রাণ। এজন্য রোগীর স্বজনদের হেলমেট পরিহিত অবস্থায় চলাচল করতে হয়। তারা আরো বলেন, তাদের সামনে ছাদ ভেঙে পড়েছে রোগীর পায়ের পাশে, অল্পের জন্য গায়ে পড়েনি।
এ বিষয়ে শ্যামনগর সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা: অজয় কুমার সাহা মুঠো ফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, মৌখিক ও লিখিত ভাবে খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ভবন ও পুরাতন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য’র নিকট হতে ডিও লেটার নিয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন এবং সাতক্ষীরা সহকারী প্রকৌশলী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। খুলনা থেকে ঢাকাতে আমাদের দপ্তরে একটা চিঠিও গিয়েছে। খুব শীঘ্রই অত্র হাসপাতালটি পুনর্নিমাণ এর একটা ব্যবস্থা হবে।
শয্যা বাড়বে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, হাসপাতালটি পুন:নির্মাণ হবে তবে আসন সংখ্যা বাড়বে কি বাড়বে না এটা একমাত্র আমাদের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বলতে পারবে, এটা তাদের সিদ্ধান্ত। শ্যামনগরের সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতে স্বাস্থ্যসেবা না নিতে হয় তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version