ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের শিমুলবাড়িয়ার যুদ্ধাপরাধী সাইফুল্লাহ’র গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, শিমুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (বর্তমানে যশোরের ঝিকরগাছার বাসিন্দা)। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, শিমুলবাড়িয়া গ্রামের মৃত গোলাম সরোয়ারের ছেলে সাইফুল্লাহ একজন চিহ্নিত কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী। ১৯৭১ সালে আমার পিতা রুস্তম আলী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল এই সাইফুল্লাহর নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীরা। এ ঘটনায় যুদ্ধাপরাধী সাইফুল্লাহসহ ৯ জন রাজাকারের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে বিগত ২০০৯ সালে একটি মামলা দায়ের করি। বর্তমানে মামলাটি সেখানে বিচারাধীন রয়েছে। যার ধার্য তারিখ রয়েছে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি। অথচ এই যুদ্ধাপরাধী নিজের অপরাধ ঢাকতে এলাকায় প্রচার দিচ্ছেন আমি নাকি তার নাম বাদ দিয়ে এফিডেভিট করে দিয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কোন যুদ্ধাপরাধীকে এফিডেভিট করে দেইনি। তিনি বলেন, এই মামলার এক নম্বর আসামি আব্দুল খালেক মন্ডল বর্তমানে কারাগারে অবস্থান করলেও আসামি সাইফুল্লাহ এখনও বীর দর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করায় ভয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে বর্তমানে আমি যশোরের ঝিকরগাছা এলাকায় অতিকষ্টে জীবন-যাপন করছি। তার পরিবারের সদস্যরা আমাকে সব সময় হত্যার উদ্দেশ্যে খুঁজে বেড়াচ্ছে। রাস্তাঘাটে দেখা হলে সাইফুল্লাহসহ তার পুত্র জুয়েল আমাকে হত্যার হুমকি প্রদর্শন করছে। মামলা দায়েরের পর সাইফুল্লাহ ও তার পুত্র জুয়েল আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে আমি বাড়ি ছাড়া। রাজাকার সাইফুল্লাহসহ তার বাহিনী যুদ্ধের সময় নির্মমভাবে হত্যা যজ্ঞে মেতেছিল। যা আমি নিজ চোখে দেখেছি। আর তারা এখন প্রকাশ্যে স্বাধীন বাংলায় ঘুরে বেড়াবে এটি মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। শুধু যুদ্ধাপরাধীই নয় তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা মামলাও। ২০০১ সালে আমার চাচাতো ভাই ইছাক আলীকে সে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। এখনও জোরপূর্বক আমার চাচার ভিটাবাড়ি দখল করে আছে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি আমি জানতে পেরেছি ওই সাইফুল্লাহ নাকি ৯৮ নং শিমুলবাড়ীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য হয়েছে। যা আমাকে হতাশ করেছে। একজন যুদ্ধাপরাধী কীভাবে বর্তমান সময়ে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমিদাতা সদস্য হয় তা আমার জানা নেই। অথচ উক্ত প্রতিষ্ঠানে বিগত ১৯৫০ সালে ৫০ শতক জমি দান করেছিলেন একই এলাকার হারুন অর রশিদের দাদা মৃত. রজব আলী। কিন্তু ওয়ারিশ সূত্রে তাকে জমিদাতা সদস্য না করে একজন যুদ্ধাপরাধীকে কীভাবে সদস্য করা হলো এটা আমার বোধগম্য নয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি (নজরুল) ওই কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী সাইফুল্লাহকে দ্রæত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ সময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, নেছার আলী গাজী ও আসমা খাতুন।
যুদ্ধাপরাধী সাইফুল্লাহ’র গ্রেফতার পূর্বক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/