Site icon suprovatsatkhira.com

আজ দেবহাটা হানাদার মুক্ত দিবস

মীর খায়রুল আলম: ১৯৭১ সালের এই দিনটি ছিল দেবহাটা উপজেলা বাসীর জন্য খুব আনন্দের। কারণ দিনটিতে এ উপজেলা থেকে পুরোপুরি ভাবে হানাদারমুক্ত হয়। আর তাই সেখান থেকে এই দিনকে ঘিরে পালন করা হয় মুক্ত দিবস।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে অবশেষে এই দিনেই দেবহাটা ছেড়ে পিছু হটে যায় পাক সেনারা। স্বাধীনতা সংগ্রামের তৎকালীন ৯নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার প্রয়াত ক্যাপ্টেন শাহাজান মাস্টারের নেতৃত্বে সম্মুখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল দেবহাটার মুক্তিকামী মানুষ। একের পর এক যুদ্ধে পরাস্ত হয়ে সেদিন দেবহাটা ছাড়তে বাধ্য হয় পাক বাহিনী ও তাদের দোসররা। সাতক্ষীরা কোর্ট চত্বরের ট্রেজারির ৪শত রাইফেল লুট করে তৎকালীন সময়ে আব্দুল গফুর,এম এল এ আয়ুব হোসেন ও ক্যাপ্টেন শাহাজান মাস্টার জীবন বাজি রেখে পরবর্তীতে ৯ নং সেক্টর গঠন করে। একাত্তরের নভেম্বর মাসের শেষ ও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের প্রতিটি দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে ক্রমেই পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পিছু হটতে থাকে। যাওয়ার সময় তারা মানুষের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে এবং পারুলিয়া, কুলিয়া, বিনেরপোতা ব্রিজ গ্রেনেড দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে যায়। পাক হানাদার বাহিনী দেবহাটার মাটি ছেড়ে যাওয়ার সময় মাটিতে পুতে রাখা এপি মাইন অপসারণকালে দেবহাটার কোঁড়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের দেহটি মাইনের বিছুরনে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেদিন এই বীর শহিদের ছিন্ন দেহটির প্রতি মাস্টার শাহাজানের নেতৃত্বাধীন সকল মুক্তিযোদ্ধারা তাদের হাতিয়ার উঁচিয়ে শেষ সম্মান টুকু জানিয়েছিল। অবশেষে তার দেহটি ভারতের টাকি সাজারু বাগানে সমাহিত করা হয়। সর্বশেষে পাক সেনাদের সুরক্ষিত পুষ্পকাটি ইটের ভাটা ঘাঁটি পতনের জয়লাভের মধ্য দিয়ে ৬ই ডিসেম্বর সমগ্র দেবহাটা থানা এলাকা স্বাধীন হয়ে সম্পূর্ণ হানাদার মুক্ত হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ে। মূহু মূহু জয় বাংলা শ্লোগানে তাৎক্ষণিক ভাবে বিজয়ের উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেবহাটা জুড়ে। এদিকে, দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে র‌্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধা নেতৃত্ববৃন্দরা অংশ গ্রহণ করবেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version