নভেম্বর ৩০, ২০১৯
পাটকেলঘাটায় সুদখোরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি: পাটকেলঘাটায় চিহ্নিত সুদখোর রহমত আলীর হাত থেকে রক্ষা পেতে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ই নভেম্বর) সকাল ১১টায় পাটকেলঘাটা থানার পাচরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনকালে বক্তব্য রাখেন, ভুক্তভোগী ফিরোজ হোসেন, রবিউল ইসলাম, মিরানা ইসলাম, আমজাদ হোসেন, মমতাজ বেগম, মনিরুল প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, সাদা চেক নিয়ে জালিয়াতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা সরকারকে ভ্যাট না দিয়ে শ্রমজীবী সমবায় সমিতি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে। সুদের হাত থেকে বাঁচতে ও সুদখোর রহমত আলীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনার জন্য ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে পাটকেলঘাটার ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এসময় ভুক্তভোগী ফিরোজ হোসেন বলেন টাকার বিশেষ প্রয়োজনে পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী ফাউন্ডেশন থেকে ২৯/১২/২০১৩ তারিখে ৩০% হারে সুদে ১ বছর মেয়াদে পরিশোধের শর্তে ২ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করি। যার প্রমানাদি আমার কাছে আছে। লেনদেনের এক পর্যায়ে মৌখিক ভাবে আমার কাছে ১৯ লক্ষ টাকা দাবি করে, পাটকেলঘাটা লালচন্দ্রপুর গ্রামের ভুক্তভোগী শেখ সামিউল ইসলাম বলেন, আমার পিতা রবিউল ইসলাম শ্রমজীবী সমবায় সমিতি থেকে ৩০% হারে ৩ লক্ষ টাকা ফাঁকা চেক দিয়ে লোন নেয় এক পর্যায়ে তারা ২২ লক্ষ টাকার মামলা দায়ের করেছে, সুদখোর রহমতের ফাঁদে পড়ে এ রকম অনেক মানুষ নিঃস্ব হতে চলেছে। পাটকেলঘাটা থানার কাটাখালী গ্রামের রজব আলীর ছেলে ভুক্তভোগী শেখ আজিজুর রহমান বলেন, আমি দৈনিক মজুরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। গত ২০১৮ সালে আমার টাকার প্রয়োজন হওয়ায় পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী ফাউন্ডেশন থেকে ৩০% হারে সুদে ১ বছর মেয়াদে পরিশোধের শর্তে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করি। যার প্রমানাদি আমার কাছে আছে। উক্ত সমিতিতে এখনও আমার ৪০ হাজার ৭৬৬ টাকা সঞ্চয় রয়েছে। তিনি আরও বলেন আমি দ্বীন মজুরির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। সমিতিতে আমার ওই ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তারা আমার কাছ থেকে আমার স্বাক্ষরিত একটি ফাঁকা চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্প জমা নেন। কিন্তু ঋণ গ্রহণের পর পারিবারিক অসুবিধার কারণে আমার কয়েকটি কিস্তি দিতে বিলম্ব হওয়ায় ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও সাবেক সভাপতি রহমত আলীর কু-পরামর্শে পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী সমবায় সমিতির পক্ষে সাধারণ সম্পাদক আশিকুজ্জামান মোড়ল সাতক্ষীরা জজ কোর্টের এক আইনজীবীর মাধ্যমে ওই চেকের পাতায় ৩ লাখ টাকা বসিয়ে আমাকে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের কথাও বলা হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির পর আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে পড়ি। ঋণ নিয়েছি ৫০ হাজার টাকা যার কিস্তিও চলমান রয়েছে। অথচ ৩ লাখ টাকা কীভাবে তারা আমার কাছে পাবে এটি আমি বুঝি না। পরবর্তীতে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি তারা শুধু আমাকেই নই পাটকেলঘাটা এলাকার অনেক গ্রাহককে এভাবে ফাঁদে ফেলে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করে দিশেহারা করেছেন। হিসাব রক্ষক রহমত আলিসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন জায়গায় অফিস খুলে লাইসেন্স বিহীন পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী ফাউন্ডেশনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছেন। গত ৬-১১-২০১৯ তারিখে তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর গত ১১-১১- ২০১৯ তারিখে তারা তাদের পাটকেলঘাটা অফিসের সামনে থেকে সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেন। অবৈধভাবে এই সাইনবোর্ড ব্যবহার করে এক সময়ের ছাগল ব্যবসায়ী রহমত আলি এখন কোটিপতি। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি (আজিজুর) পাটকেলঘাটা শ্রমজীবী ফাউন্ডেশনের আড়ালে অবৈধ ভাবে সুদের বাণিজ্য পরিচালনাকারী সুদখোর রহমত আলীদের এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। 8,584,444 total views, 1,130 views today |
|
|
|