নুর মনোয়ার: জনবল সংকটে ধুঁকছে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজী বিভাগসহ জরুরী বিভাগের অবকাঠামোর কাজ শেষ হলেও জনবল সংকটের কারণে চালু করা যাচ্ছে না এ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলো। ফলে সাতক্ষীরার ২২ লক্ষ মানুষ উন্নত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া হিসাবরক্ষক, স্টোর কিপার ও ফার্মাসি বিভাগে তদন্ত চলার কারণে ডিসপেনসারিতে ওষুধ সরবারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। রোগীদের অভিযোগ স্টোর রুমে ওষুধ থাকার পরও কাক্সিক্ষত ওষুধ পাচ্ছে না। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল না থাকায় স্টোর রুমে ওষুধ থাকার পরও রোগীদের সরবারহ করতে কিছু সমস্যা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রিসিপশন ডেস্কের পাশে ওষুধ সমূহের নাম তালিকায় যে সকল ওষুধের নাম দেওয়া আছে তার বেশিরভাগই সরবরাহ করা হয় ডিসপেনসারিতে। ওষুধের নাম তালিকায় আছে ১৫টি ওষুধের নাম, কিন্তু ডিসপেনসারিতে আছে ৫ প্রকারের ওষুধ, আরও ২ প্রকারের ওষুধ আছে, কিন্তু তা আছে স্টোর রুমে। ডিসপেনসারিতে ডিউটিরত আইট সোর্সিংকর্মী আব্দুল কাদের জানান, নিয়ম আছে প্রতি বৃহস্পতিবার স্টোর থেকে ওষুধ আনতে হয়। যে ২ প্রকার ওষুধ শেষ হয়েছে তা বৃহস্পতিবার আনা হবে।
চিকিৎসা নিতে আসা তালা উপজেলার তালা গ্রামের মিজানুর রহমান জানান, আমাকে ডাক্তার সাহেব ওষুধ লিখে দিয়েছেন, আর বলেছেন আমাকে দুই রকমের ওষুধ হাসপাতাল থেকে দিবে কিন্তু ডিসপেনসারি থেকে এক প্রকারের ওষুধ দিয়েছেন।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহকারী কাম ডাটা এন্ট্রি অপারেটার আব্দুল ছাত্তার জানান, ফার্মাসিস্ট না থাকায় আমাকে ফার্মাসিস্টের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। একই সাথে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। একাই তিন জনের কাজ করতে হয়।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী হিসাবরক্ষক খায়রুল ইসলাম জানান, স্টোর কিপার না থাকায় আমাকে স্টোর কিপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বর্তমানে স্টোরে ছয় প্রকারের ট্যাবলেট, পাঁচ প্রকার ক্যাপসুল ও দুই প্রকারের ইনজেকশন আছে, শুধু মাত্র বৃহস্পতিবার নয় জরুরী প্রয়োজনে যে কোন দিন ডিসপেনসারিতে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন আমরা ওষুধের তালিকা ডাক্তারদের কাছে পৌঁছে দেই।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থো:বিভাগের ডা. আলমগীর কবির জানান, আমাদের কাছে ওষুধের যে তালিকা আসে তা থেকে ওষুধ লিখি কিন্তু রোগীরা সে ওষুধ ঠিকমত পায় কি না তা আমার জানা নেই।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের প্রধান সমস্যা জনবল সংকট। আশা করছি আগামী ৩১ ডিসেম্বর মধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হবে। অবকাঠামোর মধ্যে লাইব্রেরি ভবন, কনফারেন্স ভবন, ডরমিটরি ভবন, পোস্টমর্টেম ভবন, স্টাফ কোয়াটার ভবন, প্রিন্সিপাল ভবন, হাসপাতালের ৮তলা ভবনসহ অন্যান্য সকল অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা। তবে অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজী বিভাগসহ জরুরী বিভাগের সরঞ্জাম থাকার পরও জনবলের সংকটের কারণে পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না । কিছুদিন আগে হাতপাতালের পেছন থেকে মাটিতে পুতে রাখা কিছু ওষুধ উদ্ধার হওয়ার পর একাউনটেন্ট, স্টোর কিপার ও ফার্মাসিস্ট উপর তদন্ত চলমান থাকায় অন্য দেরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর ফলে সেবা দিতে কিছু সমস্যা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন কমিটির রেজুলেশনে আমরা বারবার জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করছি। আমরা সব সময় এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। আশাকরি দ্রæত এ সমস্যা সমাধান হবে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জনবল সংকটে সেবা বঞ্চিত রোগীরা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/