Site icon suprovatsatkhira.com

কাশিমাড়ীতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের কাচিহারানিয়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নামে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্তমান সরকার সারা বাংলার প্রতিটি ঘরকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার মধ্যে দুটি উপজেলাকে ইতোমধ্যে শত ভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করেছে। বাকি ৫টি উপজেলাকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শত ভাগ বিদ্যুতায়ন ঘোষণা করার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগ। কিন্তু কতিপয় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি সরকারের এই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। দুষ্ট এই চক্রটি আর্থিক ফায়দা লুটার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নাম করে বিদ্যুৎ প্রত্যাশীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীরা জানায়, গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন মেয়াদে কাচিহারানিয়া গ্রামের আহমেদ শেখের ছেলে আব্বাস আলী শেখ ঐ এলাকায় বিদ্যুৎ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে গ্রাহক প্রতি ২৫শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে। এই এলাকায় বিদ্যুৎ প্রত্যাশী ৫৩ জন ভুক্তভোগী গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় লক্ষাধিকের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। ভুক্তভোগী সুরেন্দ্র মন্ডলের ছেলে কালিপদ মন্ডল জানান, আব্বাস আলী গত দু’বছর আগে কারেন্টের মিটার দেওয়ার নাম করে তিন হাজার টাকা নিয়েছে। বর্তমানে মিটারও দিচ্ছে না, টাকাও ফেরত দিচ্ছে না। একই এলাকার মৃত সাকাত আলী গাজীর ছেলে লুৎফর রহমান জানান, কারেন্ট দেওয়ার নাম করে গত এক বছরেরও ঊর্ধ্বে আব্বাস আলী আড়াই হাজার টাকা নিয়েছে। এখনও কারেন্ট দেয়নি। আব্বাস আলীকে বারবার বলছি, তবে সে বলছে ‘শীতকালে কারেন্ট কি করবা?’ ভোলানাথ মন্ডলের স্ত্রী দীপালি জানান, মিটারের জন্য আব্বাস শেখের কাছে এক বছর আগে তিন হাজার টাকা দিয়েছি, তবে এখনও কারেন্ট দেয়নি। মুজিবর রহমান নামে অপর এক বিদ্যুৎ প্রত্যাশী ব্যক্তি জানান, আমার বাড়িতে দুটি বিদ্যুৎ মিটারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে আব্বাস শেখ। পরে বিততের খুঁটি হতে আমার বাড়ি পর্যন্ত সার্ভিস তাঁর টানানোর সময় আরও পাঁচ শত টাকা নিয়েছে সে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন ভুক্তভোগীদেরও বিদ্যুৎ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই তার বিরুদ্ধে। প্রভাবশালী আব্বাস শেখ স্থানীয়দের সাথে বিদ্যুৎ দেওয়ার নামে টাকা নিয়ে গত দু’বছর ধরে তাল বাহানা করে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে আব্বাস আলী শেখ বলেন, টাকা আমি একা খায়নি। মোস্তাফিজুরকেও দিয়েছি। মোস্তাফিজুর সম্পর্কে স্থানীয়রা জানায়, সে একটি মুদি দোকানদার হয়ে খুব অল্পদিনে লাখপতি বনে গেছেন। বর্তমানে আলিশান বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাছাড়া প্রায় সময় দেখা যায় সে শার্টের মত নিত্য নতুন মোটরসাইকেল পাল্টায়। মোস্তাফিজুর রহমান কাশিমাড়ীর বোলারটোপ গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক বছর ধরে মোস্তাফিজুর নিজেকে বিদ্যুৎ বিভাগের লোক বলে দাবি করে ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের সাথে কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে মোস্তাফিজুরের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত আব্বাস শেখ ও মোস্তাফিজুর রহমানের থেকে টাকা ফেরত সহ তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সাংসদ এসএম জগলুল হায়দারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version