অক্টোবর ৫, ২০১৯
বেনাপোল চেকপোস্টে বিজিবি কর্তৃক তল্লাশীর নামে হয়রানির অভিযোগ
এম ওসমান, বেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোল চেকপোস্টে তল্লাশীর নামে বিজিবি কর্তৃক হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এতে বিরক্ত পাসপোর্ট যাত্রীরা। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের পরও যাত্রীদের দু’দফায় পড়তে হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র টেবিল চেকপোস্টের সামনে। যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশীর আইন থাকলেও হাতড়ানো হয় প্রতিটি ব্যাগ। কখনও মালামাল ফেলে রাখা হয় মেঝেতে। বেনাপোল বিজিবি চেকপোস্টে মেঝের চারিদিকে ব্যাগ ছড়িয়ে ছিটিয়ে চেকিং নিত্যদিনের ঘটনা। ব্যাগ-লাগেজ মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে উলট পালট করে চলে তল্লাশী। ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে দেশে আসা পাসপোর্ট যাত্রীরা ইমিগ্রেশন কাস্টমসের থেকে বেরিয়েই আবার বিজিবির টেবিল চেকপোস্টের মুখোমুখি হয়। চলে প্রতিটি ব্যাগ, লাগেজ হাতিয়ে তল্লাশী। তাদের ইউনিফর্মে থাকে না কোন নেমপ্লেট। আইনি সুরক্ষা চাইলে ক্যাম্পে নেয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, ৩ কিলোমিটার সামনে একই বাহিনীর আরও একটি চেকপোস্ট। প্রতিটি লাগেজ হাতড়ে চলে আবারও তল্লাশী। ভারত থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের ভাষায় এ তল্লাশীর ধরন অসম্মানজনক। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর কাস্টমস আইন ১৯৬৯ এর সেকশন (৬) এর বলে বিজিবিকে ৮টি ধারার ক্ষমতা দেয়া হয়। যদিও এসব চেকপোস্ট চলছিল তার আগে থেকেই। আইনের ১৫৮ ধারা অনুযায়ী যুক্তিসংগত কারণে তল্লাশীর কথা বলা হলেও বিজিবি সদস্যরা সবার লাগেজেই যুক্তিসংগত কারণ খুঁজে পান। আবার ১৫৯ ধারায় গেজেটেড কাস্টমস কর্মকর্তা অথবা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তল্লাশীর কথা বললেও যাত্রীকে সেই সুরক্ষা দেন না দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা। ভ্রমণ, চিকিৎসাসহ নানা কারণে ভারত থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ হাজার যাত্রীর যাতায়াত বেনাপোলে। যাদের মতে একই সংস্থার দু’দফা এমন তল্লাশী রীতিমতো মানহানীকর। এক যাত্রী বলেন, ‘একই সংস্থার দুইবার তল্লাশীর কোন যৌক্তিকতা নাই।’ আরেক যাত্রী বলেন, ‘ওই খান থেকে বের হবার পর অনেকের কাছে অবৈধ জিনিস থাকতে পারে। কিন্তু চেকিং পদ্ধতিটা আরও উন্নত করা দরকার। তাদের আচরণ ভালো করা দরকার।’ কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী জানান, চলতি তল্লাশীর ধরন যাত্রী সেবার অন্তরায়। ক্ষোভ আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরে কেউ যদি অভিযোগ করতে চায় তাহলে তারও একটা নীতিমালা থাকা দরকার।’ ইন্দো বাংলা চেম্বার সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, ‘এটা আর কতদিন? আমরা বিরক্ত। নো-ম্যান্সল্যান্ড থেকে তিন জায়গায় চেকিং। এটার কোন যুক্তি নেই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে যে কোন ব্যক্তিকে তল্লাশী করতে পারে।’ এ বিষয়ে বিজিবি মহা-পরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল আজিজ বলেন, সমস্যা সমাধানে এরই মধ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। সে কারণেই আমরা লাগেজ স্ক্যানার বসিয়েছি। এছাড়াও আমরা চেকপোস্টে সন্দেহভাজন যেসব ট্রাক বা বাস থাকবে সেগুলোকে আমরা চেক করব। এছাড়া অন্যসব গাড়ি আমরা চেক করব না। 8,572,474 total views, 244 views today |
|
|
|