অক্টোবর ৭, ২০১৯
তালার চল্লিশা বিলে মাছ চাষ : বদলে গেছে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা
তালা প্রতিনিধি: তালা উপজেলার চল্লিশা বিলে পরিকল্পিতভাবে মাছ চাষ করে বদলে গেছে এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থা। তবে মৎস্য চাষিদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন দেখে এলাকায় কতিপয় ব্যক্তি তাদের থেকে বিভিন্ন সময়ে চাঁদা দাবি করে আসছে বলে অভিযোগ করছেন চাষিরা। ইসলামকাটি ইউনিয়নের বারাত, মনোহরপুর, ঢ্যামশাখোলা, গণডাঙ্গা ও কাজিডাঙ্গা সহ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত চল্লিশা বিলের পানি নিষ্কাশন সু-ব্যবস্থা না থাকায় এক সময় বিলটি প্রায় বছর ধরে জলাবদ্ধ থাকতো। এর সাথে বিল সংলগ্ন এলাকার অনেক গ্রাম ও বাড়ি জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হতো। বর্তমানে এই বিলে পরিকল্পিত ভাবে মাছ চাষ হচ্ছ। এতে জমি মালিক, দরিদ্র কৃষক, হতদরিদ্র পরিবার, বেকার যুবকরা সহ নানান শ্রেণি পেশার মানুষ এখন আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। বিশাল এই বিলে জলাবদ্ধতার মৌসুমে মাছ চাষের পর বোরো মৌসুম ধান চাষ হওয়ায় তালা উপজেলায় ধান ও মাছ চাষের সরকারি লক্ষ্যমাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আড়াই হাজার বিঘা আয়তনের চল্লিশা বিলের মধ্যে প্রায় ৯শ বিঘা জমিতে ৮বছর ধরে পরিকল্পিত ভাবে মাছ চাষ করছে বিশিষ্ট মৎস্য চাষি এস. এম. মুনজুর রহমান। এর ফলে এলাকার একাধিক ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে এবং ধান চাষের সুযোগ পাওয়া সহ হারির টাকা পেয়ে জমি মালিকদের মাঝে অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া এই ঘেরের আয় দিয়ে ঘের মালিক এস. এম. মুনজুর রহমান এলাকার ছোট বড় কাচা রাস্তা, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির’র অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের বিপদে-আপদে এবং পারিবারিক বিভিন্ন প্রয়োজনে সহযোগিতা দেয়ায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষ নানান ভাবে উপকৃত হচ্ছে। কিন্তু এই সেবামূলক মৎস্য চাষ ব্যবসা কর্মকান্ডে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার একটি চাঁদাবাজ ও কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে মৎস্য ঘের ও ঘের মালিকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অপ-তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে ঘের মালিক সহ বিলের জমি মালিক ও উপকার ভোগী দরিদ্র মানুষরা হয়রানির শিকার হচ্ছে এবং তাদের মাঝে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চল্লিশার বিলের জমি মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম, সুজনশাহা গ্রামের মোবারক হোসেন, ঢ্যামসাখোলা গ্রামের রোস্তম সরদার, মৌলভী নেছার উদ্দীন ও গণডাঙ্গা গ্রামের দেবেন সরকার সহ একাধিক জমি মালিক জানান, তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার বিঘা আয়তনের চল্লিশার বিল বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত ছিল। বর্ষা মৌসুমে এই বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় বছরের প্রায় ১২মাস বিলটি সহ বিল সংলগ্ন জনবসতি জলাবদ্ধ থাকতো। এতে বিলের জমি মালিকরা ধান চাষে ব্যর্থ হতো। তাছাড়া বাড়ি ঘর জলাবদ্ধ থাকায় মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জীবন-যাপন করতো। এমতাবস্থায় কেশবপুর উপজেলার মৎস্য চাষি এস. এম. মুনজুর রহমান অত্র এলাকার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, বিলের জমি মালিক ও বিল সংলগ্ন এলাকার মানুষদের মতামতে এই বিলে মৎস্য চাষ শুরু করেন। ৮বছর ধরে ওই বিলে মৎস্য করে তিনি প্রতিবছর জমি মালিকদের ৩৩ শতাংশের বিঘা প্রতি সাড়ে ৫হাজার টাকা এবং কুয়া, খাল, ডোবা ও নালার জন্য ২০ হাজার টাকা করে হারি দিচ্ছেন। এছাড়া বোরো মৌসুমের আগেই ঘের মালিক বিল থেকে সেচ দিয়ে জলাবদ্ধতার পানি নিষ্কাশন করে দিচ্ছেন। জমির শত ভাগ মালিক সময়মতো হারির টাকা পাওয়ায় এবং বোরো মৌসুমের আগেই বিল জলাবদ্ধতা মুক্ত করে দেয়ায় এলাকার সব শ্রেণির মানুষ ব্যাপক ভাবে উপকৃত হচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, বিগত ৮ বছর ধরে চল্লিশা বিলে মৎস্য চাষ হওয়ায় এলাকার কৃষক, জমি মালিক ও বেকার মানুষ সহ অনেক দরিদ্র এবং হতদরিদ্র মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হয়েছে। এছাড়া ঘের মালিক এস. এম. মুনজুর রহমান বিল সংলগ্ন এলাকা জলাবদ্ধতামুক্ত করতে তিনি নিজ উদ্যোগে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে একাধিক কাঁচা রাস্তা সংস্কার সহ উঁচু করে দিয়েছেন। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলন, প্রতিবছর মাছ চাষের মৌসুম শুরু হলেই এলাকার কতিপয় চাঁদাবাজ এবং কুচক্রী মহল এই মৎস্য ঘেরের বিরুদ্ধে নানান অপপ্রচার চালানো সহ ঘের মালিকের কাছে চাঁদা দাবি, ঘেরের কর্মচারীদের উপর হামলা-মামলা ও মাছ লুট পাট করে ঘের মালিককে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। ওই কুচক্রী মহলের একের পর এক হয়রানিতে বর্তমানে ঘের মালিক সহ ঘেরের ৬শতাধিক উপকার ভোগী জমি মালিক, কর্মচারী ও সাধারণ কৃষক আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যেকারণে জনস্বার্থে চাঁদাবাজ শ্রেণির ওই কুচক্রী মহলদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক অপ-তৎপরতা, অপপ্রচার ও হয়রানিকর কর্মকান্ড রোধ করার জন্য এলাকার সর্বস্তরের মানুষ প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। 8,640,672 total views, 5,671 views today |
|
|
|