নিজস্ব প্রতিনিধি: ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত নায়েক নুর ইসলামকে গ্রেফতারের আদেশ প্রদান ও হাতকড়া পরানোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনে ব্যর্থ হয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের উপস্থিতিতে তীব্র উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সমঝোতা ছাড়াই চলে যান জেলা প্রশাসক।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর আনুমানিক বেলা ১২ টায় বসতভিটার পানি অপসারণকে কেন্দ্র করে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের শীতলপুর গ্রামে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর ইসলাম (৭০) এর বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরদার মোস্তফা শাহিন।
এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা নূর ইসলামকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। জরিমানার টাকা পরিশোধের জন্য সময় প্রার্থনা করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা নূর ইসলামের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এক পর্যায়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা নূর ইসলামকে হাতকড়া পরিয়ে পুলিশের গাড়িতে উঠানোর জন্য এ এস আই সাইদুর রহমানকে নির্দেশ দেন। তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয়রা হাতকড়া পরানোর প্রতিবাদ জানায়।
কিছু সময়ের মধ্যে প্রতিবেশী মহিলারা জরিমানার টাকা জোগাড় করে এনে দিলে ওই মুক্তিযোদ্ধার হাতকড়া খুলে দেয়া হয়। যুদ্ধাহত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হাতকড়া পরানোর ঘটনা জানাজানি হলে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টির সুষ্ঠু নিরসনের জন্য গত ৪ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে লিখিতভাবে জানান মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ। জেলা প্রশাসক বিষয়টি নিরসনের জন্য ১২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী ও ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিনকে সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে এসে উভয় পক্ষের নিকট ঘটনার বর্ণনা শুনে সমঝোতার ব্যবস্থা গ্রহণের এক পর্যায়ে পুনরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে শেষ পর্যন্ত কোন প্রকার সমঝোতা ছাড়াই তিনি ইউএনও কে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ছেড়ে চলে যান। এদিকে সমঝোতা বৈঠকে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিনের উগ্র আচরণের কারণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির নিরসন না হওয়ায় সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।