নিজস্ব প্রতিনিধি: সারাদেশে যখন ধর্ষণ আতঙ্ক বিরাজ করছে ঠিক সেই সময়ে দেবহাটায় একাধিক মাদ্রসা ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে উঠেছে কুলিয়ার মশিয়ার সরদারের ছেলে শামছুজ্জামান (৪৫) নামের এক শিক্ষককে বিরুদ্ধে। সাম্প্রতিক ৭ম শ্রেণির ছাত্রকে বলাৎকার করতে যেয়ে ধরা পড়ায় ঐ শিক্ষককে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাময়িক বরখাস্ত করে জবাব চেয়ে এক সপ্তাহের সময় বেধে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সোমবার ৯ সেপ্টম্বর অভিযুক্ত মাদ্র্রসা শিক্ষককে বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করার পর কমিটির সিদ্ধান্ত ক্রমে তাকে ২ মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই আদেশ জারির পাশাপাশি ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত টিমও গঠন করা হয়। ভিকটিমের পরিবার জানায়, গত সোমবার মাদ্রাসা শুরুর আগে কোচিং ক্লাসে আসলে ওই ছাত্রকে বলাৎকার করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। মাদ্রাসা সুপারের ছত্রছায়ায় ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি সুপারের অপসরণ চেয়ে প্রতিবাদ করায় তড়িঘড়ি করে অভিযুক্ত শিক্ষককে ২মাসের বরখাস্তের সুপারিশ উপজেলা শিক্ষা অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একে একে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্য তথ্য। সে টানা ২ বছর ধরে ৮ম শ্রেণির আরেক ছাত্রের সাথে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বলাৎকার করে আসছে বলেও অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক শামসুল সরদার বিরুদ্ধে। বিষয়টি মাদ্রসারা সুপারের কানে গেলেও তিনি বারবার ধামাচাপা দিয়ে আসছেন বলেও অভিযোগ ভূক্তভোগী পরিবারের। এমনকি আরেক ছাত্রকে বলাৎকার করতে যেয়ে ধরা পড়লে নিজের পদ ঠিক রাখতে ১০ কাঠা জমি মাদ্রাসার নামে লিখে দেন তিনি। তাছাড়া বিভিন্ন সময় ধরা পড়লে অর্থের বিনিময়ে বার বার পার পেয়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনতা ফুসে উঠেছে। বিভিন্ন সময় প্রতিবাদ করতে গেলে সুপার বিভিন্ন কৌশলে সেটি এড়িয়ে যেতেন। তবে এবারের অপকর্ম ঢাকতে না পেরে সুপার নিজেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তবে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক শামছুজ্জামান লোক লজ্জার ভয়ে নিজেকে সমাজ থেকে আড়াল করে রেখেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা বলেও জানান তিনি।
এদিকে, সোমবার বিভিন্ন অভিযোগ ও বরখাস্ত আদেশের বিষয়ে মাদ্রাসার সুপারের সাথে যোগাযোগের জন্য সরেজমিনে গেলে তিনি কর্মস্থলে ছিলেন না। পরে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মাদ্রাসায় প্রাইভেট পড়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এমন অপরাধ করেছে। এর আগেও তিনি এমন অপরাধে জড়িয়ে পড়লে তাকে প্রাথমিক ভাবে ক্ষমা করা হয়েছে। এবার তার বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় তাকে ২ মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন জানান, আমরা তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি শুনেছে একাধীক ছাত্রকে ঐ শিক্ষক বলাৎকার করেছেন। তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুলিয়ায় এলাহি বক্স দাখিল মাদ্রাসায় ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ!
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/