আগস্ট ৩, ২০১৯
যুবউন্নয়নের প্রশিক্ষণ ও ঋণ সুবিধা কাজে লাগিয়ে কাদাকাটির ইদ্রিস আলী এখন সফল খামারি
সমীর রায়, আশাশুনি : যুবউন্নয়নের প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সুদের ঋণ সুবিধা কাজে লাগিয়ে কাকাদাটি গ্রামের ইদ্রিস আলী এখন জীবন সংগ্রামে জয়ী সফল মানুষ। নিজের ইয়াসফি সমন্বিত কৃষি প্রকল্পটিতে তার অধীনে এখন আটজন কর্মচারী প্রকল্পটি দেখাশোনা করে। যাদের বেতন সর্বোচ্চ ১০ হাজার ও সর্বনি¤œ ৫ হাজার টাকা। তিন বছরে প্রকল্প থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের মূলধন ৩২ লক্ষাধিক টাকা এবং মাসিক নীট আয় ৬০ হাজার টাকা। সাফল্য এমনি এমনি তার কাছে ধরা দেয়নি। এ জন্যে তাকে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হয়েছে ও আত্মবিশ্বাসের সাথে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। আর তাকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেছেন আশাশুনি উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস। ইদ্রিস আলী (৩৫)। কর্মস্পৃহা চঞ্চল একজন তরতাজা যুবক। উপজেলার কাকাদাটি গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত বাবা মোকছেদ আলী সরদারের তিন সন্তানের মধ্যে ২য়। তিনি জানান, ২০০৩ সালে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে ঘরে বসেই দিন কাটাচ্ছিলাম। অভাবের সংসারে বাবাকে সাহায্য করতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম। কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। ইতোমধ্যে লোক মুখে শুনলাম বেকার যুবকের আত্মকর্ম সংস্থানের জন্য সরকারের যুব উন্নয়ন অধিদফতর ব্যবস্থা করে থাকে। এরপর একদিন আমি নিজে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসে যোগাযোগ করি। উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস আমাকে ০১ ডিসেম্বর’১৬ তারিখ থেকে ০১ মাস মেয়াদি মাছ চাষসহ বিভিন্ন অর্থকরী বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা অফিসে প্রেরণ করেন। আমি সাফ্যলের সাথে প্রশিক্ষণ শেষ করি। আমার লক্ষ্য ছিল প্রশিক্ষণলদ্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে একটি সমন্বিত কৃষি খামার তৈরি করা। আমি ২০১৭ সালের শুরুতেই প্রথমে ছোট আকারে নিজের বাড়িতেই ইয়াসফি সমন্বিত কৃষি খামার প্রতিষ্ঠা করি। এখানে হাঁস-মুরগি, গরু, ছাগল, কবুতর পালন শুরু করি। বর্তমানে গরুর খামারে ১০টি জার্র্সি গরু রয়েছে। যার মধ্যে ৩টি গাভি ও ৭টি মোটা তাজা করণের জন্য পালন করা হচ্ছে। ২৫টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। রাজহাঁস ও পাতিহাঁস রয়েছে ৪০টি। যেহেতু আমার মাছ চাষের প্রশিক্ষণ ছিল সেজন্যে আমি গবাদি পশু পালনের পাশাপাশি ৫০ শতক একটি পুকুর ০৩ তিন বছরের জন্য লিজ নেই। এই সাথে নিজের ১০০ শতকের একটি পুকুর যোগ করে মোট ১৫০ শতক আয়তনের ২টি পুকুরে বিভিন্ন জাতের পোনা মাছ উৎপাদনের কাজ শুরু করি। পাশাপাশি মাছের খামারে বছরে একবার ধান চাষ করি। প্রাথমিক সাফল্য অর্জিত হলে আমি আরো উৎসাহী হয়ে উঠি। পরের বছরে পোনা মাছের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পেলে আমি নিজ এলাকার আরো ৩০০ শতকের ৮টি নালা ও পুকুর লীজ নেই। পরিকল্পিতভাবে মাছের পোনা উৎপাদন খামারে রূপান্তর করি। পরবর্তীতে কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদফতর থেকে ৬০ হাজার টাকার ঋণ গ্রহণ করি যা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করছি। এরপর প্রকল্পে গবাদী পশু, গরু, ছাগল, কবুতর, ধান চাষ, নার্সারি যোগ করি। সেগুলো থেকেও উল্লেখযোগ্য হারে নিয়মিত আয় হচ্ছে। 8,883,312 total views, 2,713 views today |
|
|
|