Site icon suprovatsatkhira.com

সংক্ষেপে কালিগঞ্জ পরিক্রমা : অ্যাড. জাফরুল্লাহ ইব্রাহিম

 

 

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে কালিগঞ্জ উপজেলার অবস্থান। এর উত্তরে দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়ন, পূর্বে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী, আশাশুনি ও শ্রীউলা ইউনিয়ন, দক্ষিণে শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি, ভূরুলিয়া ও নুরনগর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে ভারতের চব্বিশ পরগোনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ অবস্থিত। সীমান্ত নদী ইছামতি দ্বারা দ্ইু দেশের সীমানা বিভক্ত হয়েছে।

বর্তমান কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ প্রান্তে নারায়নপুরে ছিল কালীবাড়ি। এর অনতিদূরে ছিল কালিগঞ্জ বাজার।
কালিগঞ্জ থানা,সার্কেল অফিস, রাজস্ব অফিস, সেনেটারি অফিস, জেলা পরিষদ অফিস ইত্যাদি কালীবাড়ি সংলগ্ন স্থানে স্থাপিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তৎকালীন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং প্রশাসনিক শীর্ষ ব্যক্তিগণ সর্বসম্মতিক্রমে প্রশাসনিক এই ইউনিটের নামকরণ করেন কালিগঞ্জ। কালীবাড়ি আঙিনায় রোপিত বকুল গাছ ও বহেরা গাছ এখনও সেই স্বাক্ষ্য বহন করে দন্ডায়মান আছে।

কালিগঞ্জ উপজেলা অসীম সম্ভাবনাময়ী একটি ঐতিহাসিক সমৃদ্ধ অঞ্চল। এর ভূ-প্রকৃতি মিশ্র উর্বর। প্রাচীনকালে সুন্দরবন কালিগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। জনস্ফিতি এবং কৃষি ও সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে বনভূমি বিলিন হয়ে গেছে। অতীতে উৎপাদন ব্যবস্থায় জীবন যাত্রার মান স্বচ্ছলতার সাথে সম্পন্ন হওয়ায় অত্র অঞ্চলের জনজীবন প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা ছিল।
জলচ্ছ¡াস এবং সাইক্লোনের মত প্রাকৃতিক দুর্বিপাক না হলে মানুষ স্থানান্তরে কচাচিৎ গমন করত এবং অন্যত্র অত্র উপজেলার মানুষের অভিবাসন ছিল না বললেই চলে। এককথায় প্রাচীনকালে এই জনপদ সমৃদ্ধ ছিল বলা যায়। মূলত অতীতে অত্র অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা ছিল পরিপূর্ণ কৃষি এবং সামান্য পরিমাণ কুটির শিল্প নির্ভর। কালিগঞ্জে পর্যাপ্ত পরিমাণ কামার, কুমার, জেলে, পরি মান, তেলী সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব থাকায় জীবন ও জীবিকার জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী হওয়ার প্রবণতা ছিল না বললেই চলে।
প্রাচীন আমল থেকে অত্র অঞ্চলের পৌন্ড্রক, বাগদী, কৈবর্ত, নমশূদ্র, কোল, শবর, হাঁড়ি, ডোম, চন্ডাল, নিশাদ, ধীবর, নামধেয় কৌমের লোকদের বসবাস ছিল সংখ্যাধিখ্য। অতীতকালে বর্ণ ব্রাহ্মন ও ক্ষত্রিয়, প্রধান সম্প্রদায় অপেক্ষা নি¤œ বর্ণের জনগোষ্ঠী ছিল সংখ্যায় বেশি। যতদূর জানা যায়, খান জাহান আলীর আগমনের সময় থেকে নি¤œ বর্ণের হিন্দুরা ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তৎপূর্বে অন্যান্য ধর্মের উপস্থিতি সম্পর্কে তেমন জানা যায় না। তবে অনুমান করা হয় পর্তুগীজদের আগমনের সাথে সাথে খ্রিস্টধর্মের প্রচারণায় কিছু কিছু নি¤œ বর্ণের কৌমের লোক খ্রিস্টধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করে। তাদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে কোন সমৃদ্ধ তথ্য জানা যায় না।
অত্র অঞ্চলে সুপ্রাচীনকালের কোন মুদ্রা বা পুরাকীর্তি আবিষ্কৃত না হওয়ায় অতীত ইতিহাস এখনও তমসাচ্ছন্ন। পনের শতকের প্রথমভাগে অত্র এলাকায় খান জাহান আলীর অনুচরগণের আগমন ঘটে। তাদের প্রচেষ্টায় অত্র উপজেলায় ইসলাম প্রচার, জলাশয় খনন, মসজিদ সংস্কারসহ প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশাসনিক সংস্কারমূলক কার্যক্রমের সূচনা ঘটে। ১৫৭২ সন থেকে ১৫৭৬ সন পর্যন্ত দাউদ খান কররানী শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। ১৫৭৬ সালে তিনি মোঘল সেনাপতি মুনিম খাঁ ও টোডরমলের কাছে পরাজিত ও নিহত হন। তার বিশ্বস্ত অনুচর দেওয়ান শ্রীহরি (বিক্রমাদিত্য) ও রাজস্ব অধিকর্তা জানকী বল্লভ (বসন্ত রায়) সুন্দরবনের গভীরে গৌড়ের সম্পদ গোপন করার ব্যবস্থা করেন। তারা গৌড়ের সঞ্চিত ধন-সম্পদ, দেহরক্ষী বাহিনীর একাংশ এবং শহরের কিছু লোক নিয়ে গৌড় ত্যাগ করে ক্রমশ দক্ষিণে যমুনা ও ইছামতির পাশে বর্তমান কালিগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর, শীতলপুর, মুকুন্দপুর এলাকা পরিস্কার করে বসতি গড়ে তোলেন। বসন্ত রায়ের নাম অনুসারে বসন্তপুর গ্রাম পরিচিত। পরবর্তীতে বসন্ত রায় ও বিক্রমাদিত্য মোঘল স¤্রাটের সনদ নিয়ে যশোর পরগনার শাসক হয়ে ছিলেন।
বিক্রমাদিত্য ও বসন্ত রায় ছিলেন অত্যন্ত বিচক্ষণ ও সুপটু। তারা অত্র এলাকাকে সমৃদ্ধ করার জন্য কুলিন ব্রাহ্মন পন্ডিত, বিশিষ্ট পরিবার, গোষ্ঠি প্রধান ও আত্বীয়-স্বজনদের আনায়ন করেন। তাদের দ্বারা শিল্প ও সংস্কৃতি যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। চৈতন্য প্রভাবান্বিত ও বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী বিক্রমাদিত্য কালিগঞ্জ উপজেলার ড্যামরাইলে নবরতœ মন্দির নির্মাণ পূর্বক প্রজ্ঞাবান সভাসদ নিয়ে সভা করতেন। ড্যামরাইলের পুরাকীর্তি নবরতœ মন্দির আজও সেই স্মৃতি বহন করে।
পরবর্তীকালে বিক্রমাদিত্যের পুত্র প্রতাপাদিত্য পরম প্রতাপে অত্র অঞ্চল শাসন করেন। তিনি কালিগঞ্জের যমুনা ও ইছামতি নদীর পূর্ব পাড় হতে ক্রমশ পূর্ব দিকে খোলপেটুয়া নদী পর্যন্ত সুউচ্চ গড় (মাটির প্রাচীর) নির্মাণ করেন। তিনি মোঘল সনদপ্রাপ্ত ছিলেন এবং অত্যন্ত সাহসীকতার সাথে সমগ্র দক্ষিণ অঞ্চলে রাজ্য বিস্তার করেন।

তার ছিল সুদক্ষ সেনাবাহিনী। বিদেশি সেনাপতি ফ্রেডারিক ডুডলী ও আগাস্টাস পেডরো প্রতাপাদিত্যের নৌবাহিনী সংগঠিত করেন। ফ্রেডারিক ডুডলীর নাম অনুসারে দুদলী গ্রামের নামকরণ করা হয়। প্রতাপাদিত্য যমুনা নদীর তীরে জাহাজ ভেড়া এবং নৌ-সেনাদের জন্য পোতাশ্রয় নিমার্ণ করেন। বর্তমান মৌতলার সুরক্ষিত পুরাকীর্তি জাহাজঘাটা আজও তার দক্ষতার স্মৃতি বহন করছে। কালিগঞ্জ উপজেলার দমদম গ্রামে প্রতাপাদিত্যের গোলাবারুদের কারখানা ছিল বলে জনশ্রæতি আছে।
১৫৯৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজা প্রতাপাদিত্য স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং বার ভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম শক্তিধর নৃপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। মূলত কালিগঞ্জ এলাকার সেটাই ছিল প্রথম স্বাধীনতা। অল্পদিন এই স্বাধীনতার পরিধি। পরবর্তীকালে মোঘল বাহিনীর সাথে যুদ্ধ হয় এবং প্রতাপাদিত্য পরাজিত ও ধৃত হন। কিংবদন্তী রয়েছে প্রতাপাদিত্যকে আগ্রা নিয়ে যাওয়ার পথে বেনারসে তার মৃত্যু হয় (হত্যা করা হয়)।
স¤্রাট আকবরের আমলে নুরুল্লাহ খাঁ অত্র এলাকায় আগমন করেন এবং অল্প দিন শাসন ও সংস্কার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নুরুল্লাহ খাঁ প্রবাজপুর শাহী মসজিদ নির্মাণ করেন এবং মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫০ বিঘা জমি লাখেরাজ ওয়াকফ প্রদান করেন।
প্রতাপাদিত্যেরে পতনের পর সৈয়দ হাকিম ও মির্জা নুরুদ্দীনসহ মির্জা নাথানের দ্বারা এই অঞ্চল শাসিত হয়। পরবর্তীতে ফৌজদার দ্বারা শাসন রীতি চালু হয়। ফৌজদার রাজ চাঁদ রায়ের সময় ভয়াবহ মহামারি এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যমুনা নদী নাব্যতা হারাতে শুরু করে এবং পরবর্তীকালে কালিগঞ্জের অংশ মৃতপ্রায় চিকন খালের রুপ পরিগ্রহ করে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর থেকে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গ ও বিশিষ্ট পরিবারের লোকজন অত্র এলাকা পরিত্যাগ করে কলিকাতা এলাকায় বসতি শুরু করেন।
ইংরেজ আমলে টিলম্যান হেষ্কেল অত্র এলাকার শাসক নিযুক্ত হন। তারপর আসেন রিচার্ড রোক। অত্র এলাকা নীল চাষের অন্তভুক্ত হয় এবং বেশ কতগুলি নীলকুঠি স্থাপিত হয়। বর্তমান কালিগঞ্জ থানা যেখানে অবস্থিত সেখানে একটি নীলকুঠি ছিল এবং কুঠিলায় উইলিয়াম কক্স সাহেব কাঁকশিয়ালী গ্রামে বাংলো নির্মাণে বসবাস করতেন।
ইংরেজ বেনিয়ারা ব্যবসায়ীক সুবিধার জন্য যমুনা নদীর ইছামতি সংযোগ সংলগ্ন বর্তমান কালিগঞ্জ সদর থেকে খোলপেটুয়া নদী পর্যন্ত খাল খনন করেন। ইংরেজ বণিক ও নীলকর উইলিয়াম কক্স এর নামে এর নামকরণ করা হয় কাঁকশিয়ালী খাল। বিশাল চওড়া ও জাহাজ চলাচলের উপযোগী হওয়ায় অত্র অঞ্চলের মানুষ একে কাঁকশিয়ালী নদী বলত। একসময় এটি প্রমত্তা ছিল। বর্তমানে বেড়ীবাঁধ নির্মিত হওয়ায় এবং উজনের পানি না আসায় এটিও মৃতপ্রায় অবস্থা।
ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামে অত্র এলকার মানুষের সক্রিয় প্রতিবাদ ছিল। নারকেল বাড়িয়ার বিদ্রোহে তিতুমীরের বাহিনীতে কালিগঞ্জ এলাকার জনসাধারণ যোগদান করে। প্রবীন লোকদের নিকট থেকে জানা যায়, কালিগঞ্জের সাঁইহাটি, বিষ্ণুপুর, ধুলিয়াপুর এলাকার প্রভাবশালী শিক্ষিত তৎকালীন তরুণ-যুব গোষ্ঠীর একটি বড় অংশ নেতাজী সুভাষ বসুর অনুসারী ছিল। অনেক কংগ্রেসী এবং মুসলিম লীগার অত্র এলাকায় ছিল।
ভাষা আন্দোলনে কালিগঞ্জের তরুণরা সক্রিয় ছিল। জনাব মতিউর রহমান খান সেলিম ও অধ্যাপক মতিউর রহমান গ্রাম-গঞ্জের অনেক যুবককে নিয়ে তৎকালে পায়ে হেঁটে ভাষা আন্দোলনের স্বপক্ষে সক্রিয় সংগঠন করেছেন মর্মে জানা যায়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে কালিগঞ্জ ছিল ৯ নম্বর সেক্টরভুক্ত। কৌশলগত অবস্থানে এর গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। সীমান্ত নদী ইছামতির ভারত পার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা সুযোগ মত পাক-সেনাদেন উপর আক্রমণ চালাত। ১৯৭১ সালের ২০ নভেম্বর কালিগঞ্জ সম্পূর্ণ শক্রমুক্ত হয়। মেজর জলিলের নেতৃত্বে ক্যাপ্টেন নুরুল হুদা, লে:বেগ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করেন। শেখ ওয়াহেদুজ্জামান, শেখ আকবার হোসেন, শেখ নাসির উদ্দিন, আব্দুল বারেক, আতাউর রহমান, সহর আলী, খান আসাদুর রহমান, আব্দুল হাকিম প্রমুখসহ কালিগঞ্জ এলাকার অগণিত মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে। কালিগঞ্জ ওয়াপদা কলোনী ছিল পাক সেনাদের ঘাঁটি। বসন্তপুর এবং উকসা ফাঁড়ির উপর পাক-সেনাদের চরম আক্রমণ ও পিরোজপুরের যুদ্ধ, খানজিয়ার যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের অনন্য ঘটনা হিসেবে আজও অত্র এলাকার মানুষের স্মৃতিতে চির জাগরুক হয়ে আছে। কালিগঞ্জ ওয়াপদা কলোনীর আশেপাশে কয়েকটি গণকবর আছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অব্যবহিত পর অত্র এলাকায় প্রত্যক্ষভাবে জাতীয় ও সরকারের নেতৃত্বদান করেছেন তাদের মধ্যে খায়রুল আনাম,এ্যাডভোকেট এম.মনসুর আলী, মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন, আলহাজ্জ্ব ওয়াজেদ আলী বিশ্বাস, আলহাজ্জ্ব কাজী আলাউদ্দিন, ডা: আ.ফ. ম রুহুল হক প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
কালিগঞ্জে বিশিষ্ট খ্যাতিমান ব্যক্তিগণের মধ্যে সাহিত্যে আ.শ.ম বাবর আলী, গোলাম মঈনউদ্দিন, গাজী আজিজুর রহমান কৃর্তিমান। চলচিত্রে ও নাটকে আমিন খান, রাণী সরকার, ফাল্গুনি হামিদ, জাতীয় পর্যায়ে অতি পরিচিত। মেধা-মননে ও জনহীতে অন্যান্যের মধ্যে আলহাজ্জ্ব ডা. আহম্মদ আলী, ডা.খলিলুর রহমান, ডা: আ.ফ.ম রুহুল হক, ডা: মোহাম্মদ শহিদুল আলম, ডা: মুজিবর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম, কৃষিবীদ মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বাহার বাবলু, প্রশাসনে শেখ আতাউর রহমান, মোহাম্মদ আবু মাসুদ,শেখ রফিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ আওয়াল, এনজিও ব্যক্তিত্ব ও আবৃত্তিকার হিসেবে আব্দুর রশিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সংগীত ও বাদ্যযন্ত্রে মোহাম্মদ সাদত্বকী, লতাপাত হোসেন, ক্ষৌনিশ রায়, এ.এফ.এম.আকরাম হোসেন বিশেষ মর্যাদার অধিকারী।

নলতা শরীফের ওরছ শরীফ, দূর্গাপূজা উৎসব, বারুনির মেলা, দোলের মেলা,রথের মেলা, কালিগঞ্জ সদরে বৈশাখী উৎসব অত্র উপজেলার অনন্য ঐতিহ্যের স্বাক্ষর। কুশুলিয়ার কাঁঠাল, কানারস, আম, লিচু, শাকসবজি, নাজিমগঞ্জ মোকামের কাপড়ের দোকান ও বিভিন্ন পন্য অত্যন্ত সুখ্যাত।
প্রবাজপুর শাহী মসজিদ, মৌতলার জাহাজঘাটা, হাম্মামখানা, সাঁইহাটি,ড্যামরাইল নবরতœ মন্দির ও নলতার প্রাচীন কালী মন্দির, প্রতাপদিত্যের গড়, মুকুন্দপুর কালী মন্দির, তারক নাথ বিদ্যাপীঠ, অত্র উপজেলার প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন হিসেবে খ্যাতিমান। কিছু প্রাচীন গৃহস্থ ও ধনী ব্যক্তিগণের পুরাতন পাকা ভবন নান্দনিক প্রাচীন স্থাপত্য হিসেবে আজও ঐতিহ্যের স্মারক হয়ে টিকে আছে।
মদিনার দরগা, সাদপুরের গাজীর দরগাহ, ধলবাড়িয়ার ছোট কাজীর দরগাহ, পীর গাজনের দরগাহ, শাহাজালালের দরগাহ, পীর কাঙালীর দরগাহ, তারালীর ষোল কাঠুরানীর পুকুর কালিগঞ্জ উপজেলার সকল ধর্মের পরম সম্মানের স্থান হিসেবে সমাদৃত। কালিগঞ্জের নলতা ওরছ শরীফ গোটা দক্ষিণ খুলনার বৃহত্তর উৎসব হিসেবে পালিত হয়। তাছাড়া প্রায় বছর ঘোড়দৌড়, নৌকা বাইচ, হাডুডু, ও লাঠি খেলার আয়োজন অত্র অঞ্চলের মানুষের প্রাচীন ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সবমিলিয়ে কালিগঞ্জের ইতিহাস- ঐতিহ্য-সংস্কৃতি এক সমৃদ্ধ অভিজ্ঞান।

কম্পোজ: শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ
কালিগঞ্জ প্রতিনিধি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version