Site icon suprovatsatkhira.com

জন্ম অন্ধ হয়েও অন্যের চোখে আলো জ্বালাতে ছুটে চলেছেন হাবিবুর

মীর খায়রুল আলম:বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক জ্ঞান অহরণের অন্যতম মাধ্যম হল সংবাদপত্র। পাঠক সহজে বিভিন্ন তথ্য ও সহজলভ্য জ্ঞান পেয়ে থাকেন সংবাদপত্র পাঠের মাধ্যমে।
বর্তমান সমাজের প্রায় প্রতিটা মানুষ সংবাদ মাধ্যমের সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত। ঠিক এই সময়ে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন একজন অন্ধ হকার। নিজের চোখের আলো না থাকলেও অন্যর চোখে আলো জ্বালিয়ে দিচ্ছেন জন্ম অন্ধ হাবিবুর রহমান। ভিক্ষা না করে সৎ পথে উপার্জন করে অন্যের নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সে দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউনিয়নের সৈয়দ আলীর পুত্র। জন্ম অন্ধ হওয়ায় ভাগ্যর চাকা ঘুরাতে না পারলেও বেঁচে থাকার তাগিদে ভিক্ষার পরিবর্তে পত্রিকা বিলি করে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন সে ৪/৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে কুলিয়া হতে পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে পত্রিকা নিতে আসে। পারুলিয়া হতে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকা নিয়ে পারুলিয়া গরুরহাট, সেকেন্দ্রা, কুলিয়া, বহেরাসহ আশেপাশে এলাকায় বিলি করতে করতে বাড়িতে ফেরেন। রাস্তা দিয়ে চলার সময় কিছুটা অনুমান বা আন্দাজ করে মানুষের বাড়িতে, দোকানে পত্রিকা বিলির কাজ করেন হাবিবুর। জন্ম অন্ধ হওয়ায় রাস্তায় চলার সময় জীবনের ঝুঁকি থাকলেও সবকিছু উপেক্ষা করে প্রতিদিনের পত্রিকা ঠিক সময় মতই মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় সে। ঝড়, বৃষ্টি, রৌদ্র সবকিছু মধ্যে একজন জন্ম অন্ধের পক্ষে খুব এ কাজ কঠিন ব্যাপার। তার পরও সত্যকে ছড়িয়ে দিতে নিবেদিত প্রাণ হাবিবুরের অসাধ্য দেখে প্রতিবন্ধী কথাটি হার মানাচ্ছে। পত্রিকা বিলির মাধ্যমে সামান্য অর্থ পেয়ে খুব কষ্টের মধ্যে স্ত্রী, ১পুত্র ও এক কন্যার সংসার পরিচালনা করতে হয় তাকে। তিনি কোন ব্যক্তির দান বা অনুগ্রহ না নিয়ে নিজে পরিশ্রম করে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কেবলমাত্র উপজেলা সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে সামান্য ভাতা ছাড়া তেমন কিছু আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন।
হাবিবুর রহমান জানান, আমি সর্বদা চাই পাঠকের হাতে সময় মত পত্রিকা পৌঁছে দিতে। আমার চলার পথে অনেক সমস্যা হয় কিন্তু কি করব ভিক্ষা না করে সৎ পথে উপার্জন করে শান্তি পায়। হাবিবুর রহমানে মত এমন একজন জন্ম অন্ধ হয়ে এ অসাধ্য কে সাধ্য করে জ্ঞানের আলো ছড়ানোর মহানুভব দায়িত্ব পালন করায় তার কর্মকান্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দেবহাটাবাসী।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version