Site icon suprovatsatkhira.com

অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় উত্তাল কালিগঞ্জ:শিক্ষার্থীদের ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন

কালিগঞ্জ প্রতিনিধি: জনসস্মুখে কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জিএম রফিকুল ইসলামকে হাত পা ভেঙে কাঁকশিয়ালী নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি প্রদানসহ লাঞ্ছিত করার ঘটনায় কলেজের শিক্ষার্থীরা হুমকিদাতা উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদীকে বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সাঈদ মেহেদীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ঝাড়ু মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় কলেজ চত্ত¡রে গিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ নাজির বাবুর সভাপতিত্বে ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানজিব আহমেদ নাহিদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষার্থী সাকিব হাসান, আমিরুল ইসলাম, মিরাজ হোসেন, সাগর হোসেন, আফজাল হোসেন, সুমন হোসেন প্রমুখ।
প্রায় ঘন্টাব্যাপি কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, গত ৩ জুলাই বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে অফিসিয়াল কাজে কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জিএম রফিকুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী কলেজের অধ্যক্ষের সাথে অসৌজন্যমূলক কথাবার্তার সূত্রপাত করেন। একপর্যায়ে মাদকাসক্ত সাঈদ মেহেদী নেশার ঘোরে থাকা অবস্থায় অধ্যক্ষ জিএম রফিকুল ইসলামকে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করে ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে উদ্যত হওয়ার পাশাপাশি অনেক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। জীবননাশের হুমকি ও অশ্লীল গালিগালাজের ঘটনা অধ্যক্ষ তার মোবাইল ফোনে রেকর্ডিং করছেন এমন ধারণা থেকে সাঈদ মেহেদী মোবাইল কেড়ে নিয়ে মেমরি কার্ড ডিলিট করে দিয়ে জঘন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন।
এসময় বক্তারা আরও বলেন, সাঈদ মেহেদী একজন মাদকাসক্ত ও নারী লোভী। গত কয়েক বছর পূর্বে সাতক্ষীরার একটি হোটেলে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটান। ওই নারীর চিৎকারে সাঈদ মেহেদী দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতা আদালত এলাকায় তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। তার নারী কেলেংকারীর বিষয় উপজেলার সচেতন মানুষ অবগত।
এছাড়াও গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্য নৌকার বিরোধিতা করেছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করেছে। আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট করে জামায়াত-শিবিরের পৃষ্টপোষকতায় অবৈধ পন্থায় নির্বাচনে জিতে বর্তমানে পেশী শক্তি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে। মানুষের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, সম্মানহানি করছে। এমনকি দলীয় নেতাকর্মীরাও তার নগ্ন থাবা থেকে নিস্তার পাচ্ছে না। সাঈদ মেহেদী মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত। একসময় ঠিকই সে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর জালে ধরা পড়বে উল্লেখ করে প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, সাঈদ মেহেদীর রক্ত পরীক্ষা করেন। তাহলে প্রমাণিত হবে সে প্রতিনিয়ত মাদকসেবন করে। অনতিবিলম্বে সাঈদ মেহেদীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছে।


শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ঝাড়ু মিছিল বের করার মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের বাঁধা প্রদান করেন কলেজের প্রভাষক একসময়ের শিবির নেতা বেলাল সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলাকারী বিএনপি নেতা ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবের ডিও লেটারে চাকরি পাওয়া প্রভাষক তাপস মিত্র, বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দলের সাতক্ষীরা জেলা শাখার সহ-সভাপতি সিরাজুল কবির। দীর্ঘদিন কলেজের পড়ালেখার পরিবেশ ধ্বংসকারী এসব দলবাজ শিক্ষকের মিছিলে বাঁধা প্রদানের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তীব্র নিন্দা জানায়। যেসব শিক্ষক নোংরা রাজনীতি ও দলবাজি করে তাদের প্রাণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালিগঞ্জ সরকারি কলেজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version