Site icon suprovatsatkhira.com

স্বামীর বিরুদ্ধে ভারতে পাচার হওয়া গৃহবধূর জবানবন্দি

এসএম তাজউদ্দিন, বাগেরহাট: বাগেরহাট থেকে ভারতে পাচার হওয়া গৃহবধূকে নয় মাস পর পুলিশ উদ্ধার করেছে। যশোরের বেনাপোল সীমান্ত পুলিশের সহায়তায় বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে বাগেরহাটে নিয়ে আসে। উদ্ধার হওয়া গৃহবধূ বৃহস্পতিবার বিকালে বাগেরহাট আদালতে স্বামীসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘নড়াইল সদর উপজেলার বড়কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখের সঙ্গে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সে আমাকে নানা অজুহাতে নির্যাতন করতে থাকে। একপর্যায়ে আরিফের মা-বাবা তার সঙ্গে ভারত গিয়ে কাজ করে খেতে বলে। পারিবারিক নানা কলহের মধ্যে ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে কৌশলে আরিফ আমাকে নিয়ে ভারতে মুম্বাইয়ে একটি ফ্লাটে আটকে রাখে। সেখানে আমার মতো আরও তিনটি মেয়ে ছিল। তিন দিন পরে পাশের আরেকটি ফ্লাটে নিয়ে যায় আমাকে। সেই ফ্লাটে আরিফের বন্ধুরা আমাকে শারীরিক নির্যাতন করতো। এই ফ্লাটে দুই মাস নির্যাতন ভোগ করার পর হঠাৎ মুম্বাই পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে নবজীবন নামে একটি এনজিওর কাছে আমাকে হস্তান্তর করে। সেখানে আট মাস থাকার পরে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা আমাকে নিয়ে এসে পিবিআইয়ের হেফাজতে দেয়।’
ওই গৃহবধূর বিধবা মা বলেন, ‘অনেকদিন পরে মেয়েকে কাছে পেয়ে আমরা খুব খুশি হয়েছি। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে যেতে চাই। বিয়ে করে স্ত্রীকে যে পুরুষ পাচার করতে পারে, আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
বাগেরহাট পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে মেয়ে খুঁজে না পেয়ে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইনে বাগেরহাট আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী নড়াইল সদর উপজেলার বড়কুলা গ্রামের আসাদ শেখের ছেলে আরিফ শেখ, তার ভাই ফয়সাল শেখ, মা পরী বেগম ও বাবা আসাদ শেখকে আসামি করা হয়। আদালতের নির্দেশে আমরা পাচার হওয়া মেয়েটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। একপর্যায়ে আমরা এনজিওর মাধ্যমে মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version