মো.আব্বাস উদ্দীন, মণিরামপুর (যশোর): মণিরামপুরের বর্গাচাষী আকরাম হোসেন চলতি বোরো মৌসুমে ৮৫ শতক জমিতে ব্রি-৬৩ জাতের ধান আবাদ করেন। কিন্তু তার সমুদয় জমির ধান চিটা হয়ে যাওয়ায় প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আকরাম এখন আর্থিক লোকসান ও ধার দেনার চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। শেষমেষ বীজ ব্যবসায়ী ও কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দ্বারস্ত হয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে তিনি এখন হতাশ!
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ঘুঘুরাইল গ্রামের আমজাদ হোসেন দফাদারের ছেলে আকরাম হোসেন একজন বর্গাচাষী। স্থানীয় পাড়দিয়া ব্রীজ সংলগ্ন খালপাড়ে দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ৮৫ শতক জমি বর্গা নিয়ে তিনি এবার উচ্চ ফলনশীল ব্রি-৬৩ জাতের ধান আবাদ করেছিলেন। মণিরামপুর বাজারের বীজ ব্যবসায়ী রওশনের দোকান থেকে তিনি বীজ সংগ্রহ করেন। কৃষক আকরাম জানান, পৈত্রিকভাবে তাদের বেশি জমি নেই। সংসারে স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে অনেক আশা করে জমি বর্গা নিয়ে ধার দেনা করে বীজ ক্রয়, জমি চাষ, ধান রোপন, সার, কীটনাশক ও সেচ দিয়ে ধানের জমি পরিচর্যা করেছিলাম। ধান গাছও বেশ ভালই হয়েছিলো। কিন্তু ধানের কুশি গজানোর সময় প্রত্যক কুশিতে ধানের দানা না হয়ে সারা জমির ধান চিটা হয়ে গেছে।
কী কারণে তার সমুদয় জমির ধান পুষ্ট না হয়ে চিটা হয়ে গেছে তা বুঝে ওঠার আগেই এসিআই কোম্পানির বালাইনাশক স্প্রে করেও কোন ফল হয়নি। পরে বীজ ব্যবসায়ী রওশনের দ্বারস্থ হলে কৃষক আকরামকে ব্যবসায়ী রওশন সাফ বলে দেন, বীজের চারা গজানোর গ্যারান্টি ছাড়া অন্য কোন প্রতিকার আমাদের কাছে নেই।
এ বিষয়ে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুর ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি সরেজমিন যেয়ে জানান, মাজরা পোকার প্রকোপে সমস্ত ধান ক্ষেত চিটা হয়ে গেছে। বীজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কম থাকে, সে ক্ষেত্রে ফসলে রোগ-বালাই বেশি হতে পারে।
বীজ ব্যবসায়ী রওশন জানান, যশোরের সরদার ট্রেডার্সের মালিক মিলন ও সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটার আহাদ আলীর নিকট থেকে বীজ ক্রয় করে আমি কৃষকদের কাছে বিক্রয় করেছি। এর ভাল মন্দ আমি জানি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার জানান, বীজের অঙ্কুরোদগম ভাল হলে ওই বীজের গুণাগুণ নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকে না। ধানের কুশি বের হবার সময় অতিরিক্ত সার প্রয়োগ ও রোগ বুঝে সঠিক বালাই নাশক প্রয়োগ করতে পারলে এ ধরনের সমস্যা থেকে কৃষকরা পরিত্রাণ পেতে পারেন।
জানা যায়, কৃষক আকরামের ন্যায়, পার্শ্ববর্তী পাড়দিয়া গ্রামের মোহাম্মাদ খাঁর ছেলে আজিজুর রহমানের প্রায় ৮০ শতক জমিতে আবাদকৃত ব্রি-৬৩ জাতের সমুদয় জমির ধান চিটা হয়ে গেছে।
মণিরামপুরে ব্রি-৬৩ জাতের ধান আবাদ করে বর্গাচাষীর মাথায় হাত
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/