মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: মণিরামপুরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানের নাম ভাঙিয়ে একই থানার এসআই প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনা সামাল দিতে ইতোমধ্যে এসআই প্রশান্ত কুমার দাসকে কুষ্টিয়া জেলায় বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া থানার এসআই রবিউল ইসলাম ও ঝাঁপা ফাড়ির ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেনকেও অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের শিরালী মদনপুর গ্রামের আমিন উল্লাহর ছেলে নূর ইসলাম পেশায় একজন চা বিক্রেতা। সাড়াপোল বাজারে তার চায়ের দোকান রয়েছে। ওই বাজারের পাশে নূর ইসলাম গত মাসের দিকে তার জমির সীমানা লাগোয়া সরকারি জমিতে মাটি ভরাট করছিল। এ ব্যাপারে স্থানীয় বঙ্কিম চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই প্রশান্ত কুমারকে। প্রশান্ত কুমার গত ৫ মে বিকেলে দু’পক্ষকে থানায় তলব করেন। কিন্তু বাদী পক্ষ সেদিন উপস্থিত না হওয়ায় শুনানী হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, ওই দিন রাতে এসআই প্রশান্ত কুমার স্থানীয় হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে নূর ইসলামকে ডেকে এনে তার পক্ষে প্রতিবেদন দেওয়া হবে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে ও ওসিকে ম্যানেজ করতে একলাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু চা বিক্রেতা নূর ইসলামের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় এক পর্যায়ে পুলিশ পক্ষের হাবিবের সাথে তার চুক্তি হয় ৫০ হাজার টাকা। সে মোতাবেক ওই দিনই ধারদেনা করে নূর ইসলাম ১৮ হাজার টাকা দেন হাবিবের হাতে। বাকী ৩২ হাজার টাকার জন্য এসআই প্রশান্ত এবং হাবিব মিলে নুর ইসলামকে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। কিন্তু নূর ইসলাম টাকা ম্যানেজ করতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে কাছে অভিযোগ করা হয়।
এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান জানান, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে তার দপ্তরে এসআই প্রশান্ত কুমারকে তলব করে ভৎসনা করেন। অবশ্য এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান। এসআই প্রশান্ত এ সময় নিজের অপরাধ স্বীকার করে এসিল্যান্ডের কাছে ক্ষমা চান। এসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান আরো জানান, এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত নূর ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ওসি সাহেব থানায় ডেকে নিয়ে এসআই প্রশান্তের সাথে আমার মিমাংসা করে দিয়েছেন। এ ছাড়া অগ্রিম দেওয়া ১৮ হাজার টাকা এসআই প্রশান্ত তাকে ফেরত দেন। তবে ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ঐ ঘটনার পর গত ৭ মে এসআই প্রশান্তকে কুষ্টিয়া জেলায় বদলির আদেশ আসে মণিরামপুর থানায়। সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান বলেন, এসআই প্রশান্ত যে কাজটি করেছেন তাতে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
মণিরামপুরে এসিল্যান্ডের নামে এসআইয়ের চাঁদাবাজি!
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/