যশোর প্রতিনিধি: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চলমান রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, বাধা যদি হিমালয়ের সমানও হয়, আমি তা অতিক্রম করবো। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার লড়াইয়ে আমি কোনো অন্যায়ের সাথে আপস করবো না।
রবিবার দুপুরে যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন এসব কথা বলেন। দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তাঁকে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তাবৃন্দ, কর্মচারী সমিতি, যবিপ্রবি ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছে। একটি নিয়োগের বিষয়ে দুর্নীতির কথা উঠেছিল, স্বচ্ছতার জন্য সেই প্রার্থীর নিয়োগও বাতিল করা হয়। তারপরেও দুর্নীতি যে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করা যায় না, এটা আপনারা জানেন। তবে আমার দৃষ্টিতে দুর্নীতি ধরা পড়লে সাথে সাথে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, এই ওয়াদা আমি করতে পারি।
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে একজন সাংবাদিকের করা এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের আমি সন্তান হিসেবে মনে করি। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ, পুলিশ ও অন্যান্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবগত আছেন। তারা সবাই আমাদের সাহায্য-সহযোগিতা করছেন। তাতেও যদি কাজ না হয়, তাহলে আমি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাব। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত আমি শিক্ষক হিসেবে থাকতে চাই। শিক্ষকের বাইরে যেন আমাকে না নেওয়া হয়। এটা যদি ওনারা বোঝেন, তাহলে খুব ভালো হবে। আর যদি শিক্ষকের বাইরে গিয়ে আমার শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে হয়, তাহলে খুব বেশি ভালো হবে বলে আমি মনে করি না। কোনো শিক্ষার্থী যদি মেসে থাকতে ভয় পায়, তাহলে তিনি নিজের বাস ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ক্লাব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউস ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দেন। যবিপ্রবি উপাচার্য অভিভাবকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘একজন মানুষ ও পিতা হিসেবে আমার যতটুকু করার, ততটুকু করবো। সকল পিতা ও মাতাদের প্রতি আমি বলবো, আপনাদের কাছে আপনার সন্তান যতটুকু নিরাপদ থাকবে, আমার কাছেও ততটুকু নিরাপদ থাকবে।’
অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও আমার শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সর্বোপরি সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরলস প্রচেষ্টায় আমরা অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। বঙ্গবন্ধু অ্যাকাডেমিক ভবনে ১৫০০ শিক্ষার্থীর ধারণক্ষমতা-সম্পন্ন কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হলে আজকে সকল বিভাগের ¯œাতক শ্রেণির সকল বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা একযোগে হচ্ছে, যা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি বিরল অর্জন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুল মজিদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক ড. নাজমুল হাসান, যবিপ্রবির ডিন অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, অধ্যাপক ড. শেখ মিজানুর রহমান, অধ্যাপক ড. জিয়াউল আমিন, অধ্যাপক ড. মৃত্যঞ্জয় বিশ্বাস, ড. ওমর ফারুক, ড. জাফিরুল ইসলাম, ড. কিশোর মজুমদার, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব, প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারি, সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) হায়াতুজ্জামান প্রমুখ।
দুই বছর পূর্তিতে যবিপ্রবি উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলন : অন্যায়ের সাথে আপস করবো না
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/