Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা : আজ শুক্রবার প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা

ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় ৮ জন সিনিয়র সাংবাদিক ও সহযোগী সদস্য মারাত্মক জখম ও আহত হয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে এশিয়ান টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান তুহিন, দৈনিক প্রবাহের জেলা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, গ্রামের কাগজের জেলা প্রতিনিধি রেজাউল ইসলাম মাছরাঙা টিভি ও আমাদের সময়ের জেলা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি, বৈশাখী টিভির জেলা প্রতিনিধি শামিম পারভেজ মারাত্মক জখম হয়েছেন। এদের মধ্যে মনিরুজ্জামান তুহিনের অবস্থা আশংকাজনক।
ঘটনার সময় প্রেসক্লাবের ভিতরে বিভিন্ন রুমে আটকিয়ে হকিস্টিক, লাঠি, ছুরিসহ বিভিন্ন অস্ত্রপাতি নিয়ে আবু আহমেদ, কল্যাণ ব্যানার্জি, আবুল কালাম আজাদ, মমতাজ আহমেদ বাপীর নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সিনিয়র সাংবাদিকদের মারপিট করে হত্যা প্রচেষ্টা করে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন সাংবাদিক জানান, শহরের বাইরে থেকে বেশ কিছু সন্ত্রাসীকে আবু আহমেদ ভাড়া করে প্রত্যুষে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরে বসিয়ে রাখেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিনিয়র সাংবাদিকরা ও সদস্য পদের জন্য আবেদনকারী বেশ কয়েকজন সাংবাদিক প্রেসক্লাবে প্রবেশ করলে ওই ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী সাথে সাথে সিনিয়র সাংবাদিকের উপর হামলা করে। এ সময় অন্যান্য সাংবাদিকরা তাদেরকে প্রতিহত করতে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা আবু আহমেদ ও আবুল কালামের ভাড়াটিয়া গুন্ডা বাহিনী এবং আবু আহমেদের পালিত ভূমিহীন নামধারী ডাকাতরা তাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে মারাত্মক মারপিট করে জখম করে। এ সময় সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা প্রেসক্লাবে পৌঁছালে ওইসব ভাড়াটিয়া ডাকাত ও গুন্ডা বাহিনী পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান ঘটনাস্থলে ঘটনাস্থলে যান।
এ সময় জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সংবাদকর্মীরা জাতির বিবেক। তাদের মধ্যে এ ধরণের আচরণ ও সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ কাম্য নয়। যে কারণে ঘটনার উদ্ভব হয়েছে প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের সেটি উপলব্ধি করে পদক্ষেপ নিলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে আরও বলেন, সদস্য, সহযোগী সদস্য ও আবেদনকারী সাংবাদিকদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উভয়পক্ষকে সাথে নিয়ে নিজেদের মধ্যে বসে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে উভয়পক্ষ আইনি সহযোগিতা চাইলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান এ সময় বলেন, উভয়পক্ষকে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। প্রেসক্লাবের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহবান জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের কয়েকজন সিনিয়র সদস্য, সহযোগী সদস্য ও সদস্য পদের জন্য আবেদনকারী বেশ কিছু সদস্য প্রেসক্লাবে প্রবেশ করার পর সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় খবর পেয়ে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সিনিয়র সাংবাদিক ও আবেদনকারী সদস্যদের উপর মারাত্মক মারপিটের ঘটনায় শুক্রবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা আয়োজনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটি। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কমসূচিতে সাতক্ষীরায় কর্মরত সকল পর্যায়ের সাংবাদিকদের অংগ্রহণের জন্য আহবান জানিয়েছেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত ও অবৈধ কমিটি বিলুপ্ত করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সভায় সাতক্ষীরায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিকদের গঠনতন্ত্র মোতাবেক সদস্য ও সহযোগী সদস্যপদ প্রদান করা হয়। সদস্য তালিকা চুড়ান্ত পূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসকের নিকট অনুরোধ জানানো হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version