Site icon suprovatsatkhira.com

আর কবে বয়স্ক ভাতার কার্ড পাবেন ৮৭ বছরের মানিক সানা?

সমীর রায়, প্রতিনিধি: মানিক চন্দ্র সানা। আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বলাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। তার জন্ম ১৯৩১ সালের ২২ অক্টোবর। একটি বয়স্কভাতার কার্ডের জন্য দুবছর ধরে আশাশুনি উপজেলার সমাজসেবা অফিসে ঘুরছেন তিনি। কিন্তু আজও ভাগ্যে জোটেনি সেই কার্ড।
রোববার (১২ মে) দুপুরে তিনি সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী চন্দ্রমল্লিকা সাহানীকে খুঁজতে অফিস ঘুরে তার বাসায় যান। এ সময় তার সাক্ষাৎ না পেয়ে বাসার গেটের পাশে ঘাসের উপর শুয়ে পড়েন। বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের চোখে পড়ে। তারা বৃদ্ধ মানিক চন্দ্রকে তুলে নিয়ে চায়ের দোকানে এনে তার কথা শুনে বিস্মিত হয়ে পড়েন। কথা বলার শুরুতে তিনি ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন। তিনি জানান, যৌবনকালে তিনবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। ৩ ছেলের মধ্যে দুটো থাকে ভারতে। একটি ছেলে (খগেন্দ্র) সামান্য জমিতে মাছের ঘের করলেও বাগদায় ভাইরাস লাগায় সেও একেবারে কপর্দক শূন্য। সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রায় দুবছর যাবত সমাজসেবা অফিসে একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য ঘুরছি। অফিসের লোক দুবার আমার আইডি কার্ডের (৮৭১০৪১৭৬৯৬৩৬৭) ফটোকপি নিয়েছেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে আজও কার্ড হয়নি। আজ (রোববার) প্রখর রোদে অফিসে এসেছিলাম, বাড়ী থেকে ১০টি টাকা হাতে নিয়ে, প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে এসেছি। দুপুরের ঝাঁ ঝাঁ রোদে ক্ষুধার্ত অবস্থায় মাথা ঘুরতে থাকায় চন্দ্রমল্লিকার বাসার সামনে ঘাসের উপর শুয়ে পড়েছিলাম। তিনি বলেন, হোটেলে গিয়েছিলাম ভাত খেতে। ১০ টাকায় ডাল ভাতও হয় না। তাই চলে এসেছি। এ সময় কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, পরিস্থিতি আর নিয়তি এখানে নিয়ে এসেছে। অসহায় ছেলের বোঝা হয়ে থাকতে বড় কষ্ট হয়। বাবা আর হয়ত বেশি দিন তোমাদের কষ্ট দেব না।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান স ম সেলিম রেজা মিলন বলেন, মানিক চন্দ্র সানা তালিকা জমা দেওয়ার পর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বরও তার তালিকায় ওনার নাম দেননি। ওনাকে বলেছি এরপরের তালিকায় অবশ্যই তার নাম দেব।
সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হুমায়ন কবীর জানান, ওই বৃদ্ধের নাম তার ওয়ার্ডের প্রতিনিধিই আমাদের কাছে দেননি। আমরা চেষ্টা করছি কোনভাবে তাকে সহযোগিতা করা যায় কিনা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version