কপিলমুনি প্রতিনিধি: থানায় মামলা করার কারণে গোটা বাড়ি পুরুষ শূণ্য। এই ফাঁকে বিবাদী পক্ষের পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কপিলমুনির বিরাশি এলাকায়। এর আগে এ নিয়ে থানায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে সালিসীতে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উভয় পক্ষের স্ব-স্ব দখল বজায় রাখতে নির্দেশ দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের বিরাশী গ্রামের মৃত. তরিপ মোড়ল এর ছেলে মোনছোপ মোড়লসহ তার চাচাতো ভাই কাদেরগংরা দীর্ঘদিন যাবৎ ওয়ারেশ সূত্রে বিরাশী মৌজার-২৮২ নং খতিয়ানের ৭০৫/৭০৬ দাগের ৫১ শতক জমি প্রাপ্ত হয়ে ভোগদখল করে আসছেন। এমন অবস্থায় তার চাচাতো ভাই মোবারক মোড়ল ঐ বন্দের পশ্চিম পাশ থেকে প্রথম দফায় ৮ শতক জমি কামাল হোসেনসহ ৩ জনের নিকট বিক্রয় করেন।
এরপর দ্বিতীয় দফায় অপর চাচাতো ভাই কাদের, আবুল হোসেন ও বোন আমেনা বেগম তাদের পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ৮ শতক জমি আবুল, কামাল ও আনার হোসেনের নিকট বিক্রি করেন। যা ক্রয় সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে দাতাদের দখলীয় পশ্চিম সীমানায় দীর্ঘ প্রায় ১৫-১৬ বছর যাবৎ ভোগ-দখল করে আসছেন। এমন অবস্থায় সম্প্রতি আবুল-কামাল মোড়লগংরা মোনছোপ, রুলামিন ও করিম মোড়লের পৈত্রিক সম্পত্তির তাদের সীমানার পূর্ব পাশের অংশ দখলে আনতে সেখানে আবাদকৃত পাট কর্তনপূর্বক রাতারাতি ঘর নির্মাণের পায়তারা চালিয়ে আসছিল। দখল প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে উল্টো পাইকগাছা থানায় মোনছোপ, রুলামিন ও করিম গংদের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকালে থানায় এএসআই রোকনুজ্জানের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষকে নিয়ে এক সালিশি বৈঠক বসে। বৈঠকের রায় অনুকূলে নিতে কামালগংরা সেখানে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য উপস্থাপন করলে হই-হট্টগোল শুরু হয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ এমদাদুল হককে অবহিত করলে তিনি উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা ও আগে থেকে মোনছোপগংদের দায়ের করা পাইকগাছা সিনিয়র সহকারী জর্জ আদালতে দেওয়ানী ৬৫/০১ মামলা বিচারাধীন থাকায় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্ব-স্ব অবস্থান বজায় রাখতে নির্দেশ প্রদান করেন।
এদিকে মৃত আব্দুল মোড়লের ছেলে কামাল মোড়ল থানায় বসাবসির মাত্র ১ দিন পর ১৬ এপ্রিল মৃত আক্কাস মোড়লের ছেলে রুহুল আমিন মোড়লকে প্রধান করে ৪ জনকে আসামি করে একই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। শুধু এখানেই শেষ নয়, প্রতিপক্ষদের বাড়ী পুরুষ শূণ্য করে মহিলাদের জিম্মি করে শনিবার বিকেলে প্রকাশ্য দিবালোকে বিবাদমান সম্পত্তিতে আবাদকৃত পাটের চারা তছরুপ করে মুহূর্তেই সেখানে একটি বাশের ঘর নির্মাণ করেছেন।
এসময় বাড়ির মহিলারা তাদের প্রতিহত করতে বাঁধা প্রদান করলেও তাদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ভুক্তভোগী মোনছোপ মোড়লের ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া কবির হোসেন (৩০) ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার প্রমান সংগ্রহে তাদের দখল কার্যক্রমের ভিডিও চিত্র নিজ মোবাইলে ধারণ করাকালীন তাকে ধরে ব্যাপক মারপিট ও মোবাইলটি ছিনতাই করে নেয়। এমনকি ঐ মামলায় তাকেও আসামি করে পুলিশে ধরিয়ে দিতে চেষ্টা করলে মহিলারা ফের এগিয়ে এসে তাকে কোন রকম উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী পরিবার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কপিলমুনিতে মিথ্যা মামলায় মহিলাদের জিম্মি করে জমি জবরদখল ও ঘর নির্মাণের অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/