এম ওসমান, বেনাপোল: যশোরের শার্শায় বাণিজ্যিকভাবে টার্কি মুরগী পালন করে বেকারত্ব দূর করে স্বাবলম্বী হচ্ছে যুবকরা। তাদের একজন স্বাবলম্বী যুবক সম্বন্ধকাঠি গ্রামের রাজু হোসেন।
রাজু হোসেন জানান, লেখাপড়া শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত হয়ে টার্কি মুরগী পালন শুরু করেন তিনি। প্রথমে ১৫০ টাকা দরে ৬০০ ডিম কিনি। ওই ডিমের বাচ্চা ফোটানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দিয়ে ইনকিউবেটর কিনে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো শুরু করি। অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করে এক বছরের মধ্যেই দ্বিগুণ মুনাফা পান তিনি। বর্তমানে এক থেকে ১০ দিনের বাচ্চা ৩০০ টাকা ও বড়গুলো ৫-৬ হাজার টাকা জোড়া বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া খাবারের খরচও কম। বাড়তি খাবার বাজার থেকে কিনতে হয় না। কলমি, হেলেঞ্চা, সরিষা, পালংসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি এদের খাওয়ানো যায়। রোগ-বালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে আড়াই মাস বয়সী টার্কিকে চারটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
রাজুর দেখাদেখি আরো অনেকে শার্শায় ছোট ছোট খামার গড়ে তুলছেন টার্কির। রাজুর খামার থেকে মুরগির বাচ্চা কিনে ঝিকরগাছার মাঠুয়াপাড়ার কামরুল ইসলাম, শিমুলিয়ার মনিরুজ্জামান বিল্লাল ও কামারপাড়ার আবু সাইদ তিন বন্ধু তিনটি খামার গড়ে তুলেছেন।
কামরুল বলেন, টার্কি তৃণভোজী প্রাণী হওয়ায় এরা লতাপাতা ও ঘাস খায়। এদের রোগ-বালাইও কম। নতুন খামার তৈরি করেছি, টার্কির সংখ্যা বাড়াতে পারলে বেশি লাভ হতো কিন্তু অর্থসংকটে এগোতে পারছি না। সরকারি সহযোগিতা পেলে খামারটি বড় করা সম্ভব হবে।
মনিরুজ্জামান বিল্লাল বলেন, রাজুর খামার থেকে ৩৬ দিনের ৩৮টি টার্কির বাচ্চা কিনে প্রথমে খামার শুরু করি। দুই মাসের প্রতিটি বাচ্চার ওজন এখন আড়াই কেজি হয়েছে। ওদের জন্য দুই কাঠা জমিতে ঘাস লাগিয়েছি।’
শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জয়দেব কুমার সিংহ জানান, রাজু ও সজীবসহ অন্যান্য খামারিরা খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আর এই পুষ্টির উৎস হিসেবে টার্কির গুরুত্ব মুরগি ও হাঁসের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। দ্রুত বর্ধনশীল একটি টার্কি বছরে ১২ থেকে ১৫ কেজি ওজন হওয়ায় এটি অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় টার্কির খামারের প্রতি আরো অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।
শার্শায় টার্কি মুরগী পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে যুবকরা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/