Site icon suprovatsatkhira.com

রাজগঞ্জ অঞ্চলে পানের দাম আকাশচুম্বি

ইউনুস আলী, নেংগুড়াহাট (যশোর): গত ২-৩ মাস ধরে মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের খুচরা বা পাইকারি বাজারে রেকর্ডমূল্যে পান বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে বেড়েছে খিলি পানের দামও।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে প্রতি পোন (৮০টি পান পাতা) পান বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকা পর্যন্ত। আমদানি কমের অজুহাতে পানের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, বললেন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা। দুই মাস আগে যে পানের দাম খুচরা বাজারে ৬০ টাকা পোন (৮০টি) বিক্রি হতো, সে পান এখন ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার যে পান ৮০ টাকায় বিক্রি হতো, সে পান এখন ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দোকানিরা বিক্রির জন্য যে পান প্রতি পোন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কিনতো, তা এখন ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এতে করে খুচরা ক্রেতারা পড়েছে বিপাকে।
ক্রেতারা বলছে, গত ২-৩ মাসে কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে পানের দাম। খুচরা ব্যবসায়ীরা আরো জানান, যে ভাবে পাইকারি বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে, সেই ভাবে বিক্রি করতে হচ্ছে।
রাজগঞ্জ বাজারের পান ব্যবসায় সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শীত ও কুয়াশার কারনে পানের ফলনে প্রতি বছর ব্যাপক ক্ষতি হয়। একদিকে পানের চাহিদা এবং অন্যদিকে যোগান কম থাকায় পানের বাজারের অস্থিরতা দেখা দেয়। যার প্রভাব পড়ে প্রায় বৈশাখ মাস পর্যন্ত।
পান চাষিরা জানান, পান গাছে এখন নতুন কোনো পানপাতা হয়না। তারপর বৃষ্টির পানিরও প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে পানের যোগান এখন কম রয়েছে। যে কারণে দাম স্বাভাবিক নয়। এ এলাকার সব থেকে বড় পানের বাজার হচ্ছে রাজগঞ্জ বাজার। আর চাষে বিখ্যাত এলাকা হচ্ছে, মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের মশ্বিমনগর ইউনিয়নের চাকলা, কাঠালতলা, পারখাজুরা ও খোরদো। এ এলাকার পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ও দেশের বাইরেও সরবরাহ করা হয়। এখানে রয়েছে সু-স্বাদু মিষ্টি পান, ঝাল পান।
পারখাজুরা গ্রামের পান চাষি নিছার আলী, সাত্তার গাজী, আতিয়ার গাজী ও আজিম উদ্দিন ভগোমানী জানান, শীত এবং কুয়াশার কারণে নতুন করে গাছ থেকে পানপাতা বের হচ্ছিলো না। এখন বৃষ্টি হয়েছে, এবার পান গাছের যৌবন কাল ফিরে আসবে এবং পানপাতা নতুন করে গজাবে। এই পান বাজারে উঠলে দাম কমে যাবে। এখন বরজে পান নেই। কিন্তু ক্ষেত পরিচর্যায় খরচ কমছে না।
রাজগঞ্জ বাজারের খুচরা পান বিক্রেতা আব্দুল মালেক জানান, বাজারে পানের দাম বাড়লেও, কাস্টমার বাড়তি টাকা দিতে চায়না। চার টাকায় কেনা একটা পানে সুপারি, জর্দ্দা, চুন দিয়ে পাঁচ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছেনা। সে কারণে ভালো মানের প্রতিটি খিলি পান বিক্রি হচ্ছে ৬ টাকা থেকে ১০ টাকায়। তাতে কিছুটা খরচ পুষিয়ে যায়। এছাড়া রাজগঞ্জ বাজারের আরেক পানের দোকানদার জানান, আমরা যেমন দামে কিনি তার সাথে একটু লাভ রেখে বিক্রি করি। তবে এবছর একটু দাম বেশি, কিন্তু তারপরও পানের মান তেমন ভাল না। পারখাজুরা গ্রামের পান চাষী নিছার আলী জানান, শীত এবং কুয়াশার কারণে পানের ক্ষতি হয়েছে। সেসময় প্রতিটি চাষির ৮০-৯০ শতাংশ পান গাছ মরে গেছে। এরমধ্যে যেসব চাষি বিভিন্নভাবে কিছু পান গাছ বাঁচাতে পেরেছে সেসব পান এখন বাজারে আসছে। যা এ অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে বাজারে পানের দাম আকাশচুম্বি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version